সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার বাংলাদেশ ইসকনকে 'ভাতে মারা'র ছক মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের! জেলবন্দি চিন্ময়কৃষ্ণ দাস-সহ ইসকনের সঙ্গে যুক্ত ১৭ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ মাস তাঁরা কোনও ধরনের আর্থিক লেনদেন করতে পারবেন না। ৫ দিন ধরে জেলেবন্দি ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভু। তাঁর মুক্তির দাবিতে সনাতনীদের বিক্ষোভে উত্তাল বাংলাদেশ। এই পরিস্থিতিতে আরও চাপ বাড়ল ইসকনের উপরে।
বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছিল মৌলবাদীরা। এই দাবিতে মামলাও দায়ের হয় আদালতে। কিন্তু সেই মামলা খারিজ হয়ে গিয়েছে। এর মাঝেই বিপাকে পড়লেন ইসকনের বেশ কয়েকজন সন্ন্যাসী। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বৃহস্পতিবার ইসকনের ১৭ জনের আর্থিক লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ দেশের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠিয়েছে। এই নির্দেশের বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় প্রভু-সহ ১৭ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ৩০ দিনের জন্য ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। চিন্ময় প্রভু-সহ তালিকায় রয়েছেন কার্ত্তিকচন্দ্র দে, অনিক পাল, সরোজ রায়, সুশান্ত দাস, বিশ্বকুমার সিংহ, চণ্ডীদাস বালা, জয়দেব কর্মকার, লিপি রানী কর্মকার, সুধামা গৌর দাস, লক্ষণ কান্তি দাশ, প্রিয়তোষ দাশ, রূপন দাস, রূপন কুমার ধর, আশীষ পুরোহিত, জগদীশচন্দ্র অধিকারী ও সজল দাস।
বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন–২০১২–এর ২৩(১)(গ) ধারায় ইসকন ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং তাঁদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত হিসাবের লেনদেন ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করার নির্দেশ দেওয়া হল। একই সঙ্গে তাঁদের মালিকানাধীন সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত সব হিসাব সংক্রান্ত তথ্য আগামী তিন দিনের মধ্যে দপ্তরে পাঠাতে হবে। এখানেই প্রশ্ন উঠছে নিষিদ্ধের দাবি খারিজ হয়ে যাওয়ায় কি এবার আর্থিক দিক থেকে ইসকনকে চাপে ফেলতে চাইছে ইউনুস সরকার? তাই কি এই পদক্ষেপ? এইভাবে সন্ন্যাসীদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হলে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়বে ইসকনের। নিত্যদিন ঈশ্বরকে সেবা করার পাশাপাশি প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তদের প্রসাদ খাওয়ানো হয় এখানে। ইসকনের হাসপাতালগুলোতেও চিকিৎসা করাতে আসেন বহু মানুষ। ফলে আর্থিক লেনদেন বন্ধ হয়ে গেলে চাপ বাড়বে সর্বক্ষেত্রে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী বৃহস্পতিবার ইসকনের তরফে জানানো হয়, “কয়েক মাস আগেই প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস, সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস এবং চট্টগ্রাম পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ইসকনের সাংগঠনিক পদ-পদবী-সহ যাবতীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। চিন্ময় দাস ইসকন বাংলাদেশের মুখপাত্র নন। তাই তাঁর বক্তব্য সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত।” ইসকন স্পষ্ট জানায়, চিন্ময় কৃষ্ণ ইসকনের সঙ্গে আর যুক্ত নন। তাই তাঁর অনুগামীদের আন্দোলনের জন্য ইসকন দায়ী নয়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের আন্দোলনকে সমর্থন করা নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেছে বাংলাদেশের ইসকন। হিন্দু ধর্মীয় সংগঠনের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, চিন্ময়কৃষ্ণের সঙ্গে কোনও দূরত্ব তৈরি করা হয়নি। তাঁর আন্দোলনকে সমর্থন করে ইসকন। তবে চিন্ময়কৃষ্ণ সম্পর্কে কিছু বিষয় শুধু স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।