সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছিলেন। দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনাই ছিল না তাঁর। কিন্তু বাংলাদেশে গণ আন্দোলন যে হিংসাত্মক আকার নেয় তাতে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। মাত্র ৪৫ মিনিটের নোটিসে দেশ ছেড়ে বোনকে নিয়ে ভারতে আসেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে মানসিকভাবে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন মুজিবকন্যা। কান্নায় নাকি এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের (Ajit Doval) সঙ্গে ঠিকমতো কথাই বলতে পারেননি তিনি!
কয়েকমাস ধরেই সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংস্কারের দাবিতে পথে নেমেছিল বাংলাদেশের পড়ুয়ারা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কোটা সংস্কারও করা হয়। কিন্তু অশান্তি (Bangladesh Violence) থামেনি। পরে এই ছাত্র আন্দোলন কার্যত 'হাসিনা হঠাও অভিযানে'র রূপ নেয়। গত ৫ আগস্ট যা ভয়ংকর আকার ধারণ করে। ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন হাসিনা। বাংলাদেশ সেনার বিমানে ভারতের হিন্ডন এয়ারবেসে আসেন তিনি। সেখানেই রাতে তাঁর করতে দেখা করেন অজিত ডোভাল। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সেসময় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন হাসিনা। কান্নায় এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন তিনি যে কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। তাই নিজের আগামী পরিকল্পনা বা কোথায় যেতে চান সেসব নিয়ে ডোভালকে কিছুই জানাতে পারেননি হাসিনা। তাঁর মানসিক অবস্থা দেখে, পরবর্তী কোন দেশে আশ্রয় নিতে চান, এই প্রশ্নও নাকি করতে পারেননি ডোভাল।
[আরও পড়ুন: হাসিনাকে আশ্রয় দিতে ‘সংকোচ’ ভারতের, কেন?]
আপাতত দিল্লির সেফ হাউসে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে ভারতে। হাসিনাকে নিয়ে তৎপরতা তুঙ্গে সাউথ ব্লকে। মঙ্গলবার সর্বদল বৈঠকও হয়েছে সংসদের অ্যানেক্স ভবনে। বাংলাদেশ নিয়ে রাজ্যসভায় বিবৃতি দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। পরবর্তী পরিকল্পনা জানানোর জন্য আপাতত হাসিনাকে কিছু দিন সময় দিয়েছে ভারত। দিল্লির সর্বদল বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন জয়শংকর। সূত্রের খবর, হাসিনা কেমন রয়েছেন, পরবর্তী গন্তব্য কী হবে তা নিয়ে যাবতীয় তথ্য নিয়মিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দিচ্ছেন ডোভাল। গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও জয়শংকরের সঙ্গেও বৈঠক করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এস জয়শংকর এবং অজিত ডোভালের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সূত্রের খবর, হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে আটকে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের অবস্থা এবং সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের পরিস্থিতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আগামী দিনে দিল্লির রণকৌশল কী হওয়া উচিত। বা ভারতীয়দের কীভাবে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব, সেটা নিয়েও কথা হয়েছে বৈঠকে।