সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বে তৃতীয় বিপজ্জনক দেশ বাংলাদেশ! চলতি বছরে হিংসার ঘটনায় সেদেশে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন সাংবাদিক। এছাড়া সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বা স্বীকৃতিপত্র বাতিল থেকে শুরু করে ভুরি ভুরি মামলা, গ্রেপ্তারি তো রয়েছেই। এখনও জেলবন্দি বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এই তালিকায় বাংলাদেশের আগে নাম রয়েছে পাকিস্তানের।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস’(আরএসএফ) এক রিপোর্ট প্রকাশ করে। এই আন্তর্জাতিক সংগঠনটি বিশ্বব্যাপী সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের নিয়ে কাজ করে। আরএসএফের রিপোর্টেই উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালে কাজ করতে গিয়ে বিশ্বজুড়ে ৫৪ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তালিকায় সব থেকে উপরে রয়েছে গাজার নাম। সেখানে ইজরায়েলি সেনার রক্তক্ষয়ী অভিযানে নিহত ১৬ জন সাংবাদিক। এর পরই রয়েছে পাকিস্তান। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠেছে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনায় পদ্মাপারে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন। বাংলাদেশের সঙ্গেই তৃতীয় স্থানে রয়েছে মেক্সিকো।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল হয়ে বাংলাদেশ। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংস্কারের দাবি ক্রমেই হিংসাত্মক আকার ধারণ করে। মৃত্যু হয় শয়ে শয়ে মানুষের। হিংসার হাত থেকে বাদ পড়েননি সাংবাদিকরাও। গত ১৮ জুলাই ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে প্রাণ হারান ঢাকা টাইমসের সাংবাদিক মেহেদি হাসান।
এরপর গণঅভ্যুত্থানের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হন বহু সাংবাদিক। হামলা চালানো হয় একাধিক সংবাদপত্রের অফিসে। প্রথম আলোর অফিসেও হামলা করে মৌলবাদীরা। এরকমই নানা হিংসাত্মক ঘটনায় নিহত হন আরও ৪ সাংবাদিক। শেখ হাসিনার পতনের পর মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর নানাভাবে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার অভিযোগ ওঠে। গত নভেম্বর মাসে জানা যায় হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) ব্যুরো চিফ-সহ ১৮৪ সাংবাদিকের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করে দিয়েছে ইউনুস সরকার।
আরএসএফ রিপোর্ট অনুযায়ী, ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বে ৫৫০ জন সাংবাদিককে বন্দি করা হয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৫১৩। এর মধ্যে চিন, মায়ানমার ও ইজরায়েলে সব চেয়ে বেশি সাংবাদিককে আটকে রাখা হয়েছে। চিনে ১২৪ জন, মায়ানমারে ৬১ জন এবং ইজরায়েলে ৪১ সাংবাদিক বন্দি রয়েছেন। নিখোঁজ ৯৫ জন সাংবাদিক।