সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। প্রায় ১১ লক্ষ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু শত আশ্বাস সত্ত্বেও কিছুতেই রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না। তাই এই সমস্যাআর সমাধান চেয়ে ফের রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থ হয়েছে ঢাকা।
সম্প্রতি রাজধানী ঢাকায় রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনার মিশেল ব্যাকলেটের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিদেশমন্ত্রি এ কে আবদুল মোমেন। বিদেশমন্ত্রকের জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে রোহিঙ্গাদের নিয়ে তৈরি হওয়া জটিল পরিস্থিতির কথা ব্যাকলেটের কাছে তুলে ধরেন মোমেন। রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিকে বিদেশমন্ত্রি বলেন, “বংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সুদীর্ঘ উপস্থিতির ফলে মৌলবাদী ভাবধারা ও অপরাধ ছড়াতে পারে। এর ফলে আঞ্চলিক স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত হবে। তাই রাষ্ট্রসংঘ দ্রুত রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করুক।” পালটা, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও প্রত্যাবাসনের জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ব্যাকলেট বলে খবর।
[আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে আপত্তিকর পোস্ট, নোবেলকে আইনি নোটিস বাংলাদেশের আইনজীবীর]
বলে রাখা ভাল, বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছে বড়সড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গারা (Rohingya)। ২০১৭ সালে বিশ্ব মানচিত্রে ব্রাত্য মায়ানমারের ওই জনগোষ্ঠীর জন্য দরজা খুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এবার জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড়সড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই শরণার্থীরা। দ্রুত এদের দেশে ফেরত না পাঠালে এই অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ আরও ছড়িয়ে পড়বে বলেই আগেও দাবি করেছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
উল্লেখ্য, ধর্ষণ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ-সহ মায়ানমার (Myanmar) সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত নির্যাতন-নিপীড়নের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে নতুন করে সাড়ে সাত লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা সাগর ও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আরও চার লক্ষ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয় নিয়ে বসবাস করছিল। সব মিলিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে এগারো লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গার বাস। তবে সমুদ্রঘেঁষা কক্সবাজারের ওপর থেকে রোহিঙ্গাদের চাপ সামলাতে সরকার এক লক্ষ রোহিঙ্গার জন্য নোয়াখালীর ভাসানচরে পুনর্বাসন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে।