সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৫ আগস্ট। গত বছর এই দিনেই বাংলাদেশে পতন ঘটেছিল শেখ হাসিনার সরকারের। আর আজ ৫ ফেব্রুয়ারি সেই ঘটনার ছমাস পার হয়েছে। আর ঢাকায় আওয়ামি লিগের সুসজ্জিত কার্যালয় এখন প্রায় পরিণত হয়েছে শৌচাগারে! ওই ভবনের সামনে দিয়ে যাতায়াত করা দায় হয়েছে সাধারণ মানুষের।
গত বছর হাসিনা দেশ ছাড়তেই বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামির কার্যালয় হামলা চালানো হয়। ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ভিতরের সব আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার পর এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ঢাকার গুলিস্তানে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামি লিগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের। পোড়া এই ভবনের নিচের তলা শৌচাগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গত ছমাস ধরে মলমূত্র জমে থাকার কারণে উৎকট গন্ধ আশপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে এই ভবনের সামনে দিয়ে যেতে গিয়ে অন্নপ্রাশনের ভাত উঠে আসার মতো অবস্থা হয় সাধারণ মানুষের।
গতকাল মঙ্গলবার এই ভবনে গিয়ে সাংবাদিকরা দেখেন, নিচের তলা লোকজন গণশৌচাগার হিসেবে ব্যবহার করছেন। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও এই শৌচাগার ব্যবহার করছেন। এছাড়া গোটা জায়গায় জল জমে রয়েছে। পড়ে রয়েছে ময়লা–আবর্জনার স্তূপ। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলে সাংবাদিকরা দেখেন বাথরুম থেকে শুরু করে সব কটি ঘরের জিনিসপত্র লুট করার পর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসবের ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে। খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দরজাও। ছতলায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কয়েকজন মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। কত দিন ধরে থাকছেন জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁরা এই ভবনে রয়েছেন। রাতে আরও অনেক লোক ভবনে আসেন বলে জানান তাঁরা।
শুধু এই ভবনই নয়, রাজধানীর তেঁজগাওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামি লিগ কার্যালয় ও ধানমন্ডিতে হাসিনার দলের সভাপতির কার্যালয়েও আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকেও লুট করে নেওয়া হয় জিনিসপত্র। তখন থেকে এই তিন ভবন অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তবে তেঁজগাওয়ের আওয়ামির কার্যালয়ের পাহারায় রয়েছেন রফিক মাতব্বর নামে এক ব্যক্তি। যিনি নিজেকে আবার বিএনপি নেতা হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি জানান, প্রতিনিয়ত লোকজন এসে অবশিষ্ট জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন। এসব ঠেকাতে তিনি কার্যালয়ের একটি গেটে তালা দিয়েছেন। আর একটি ফটক খুলে নেওয়ার পর সেখানে বিভিন্ন জিনিস রেখে প্রবেশপথ বন্ধ করেছেন, যাতে কেউ ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে।