সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী সোমবার বাংলাদেশের বিজয় দিবস। আর সেদিন কলকাতায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে যে অনুষ্ঠান হবে তা যোগ দিতে পারেন ভুয়ো মুক্তিযোদ্ধারা! এমনই আশঙ্কা তসলিমা নাসরিনের। ফেসবুকে একটি পোস্ট করে তিনি আর্জি জানিয়েছেন, ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের কাউকে যেন ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো না হয়।
ঠিক কী লিখেছেন তসলিমা? তাঁকে ফেসবুকে লিখতে দেখা যায়, 'কলকাতায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে উদযাপন করা হবে ১৬ই ডিসেম্বর, বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস। এতে থাকবেন ৭১ সালে যে ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, তাঁদের কয়েকজন। বাংলাদেশ থেকেও নাকি প্রতিনিধিদল আসবে । এই প্রতিনিধিদলে যেন থাকেন সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধা, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নয়। বিভিন্ন সরকার কিন্তু স্বজনদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট বিতরণ করেছেন নানা রকম সুবিধের লোভে।
আর একটি কথা, সরকারের কাউকে যেন আমন্ত্রণ জানানো না হয়। কারণ সরকারে যাঁরাই আছেন, সকলে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকারপন্থী, পাকিস্তানপ্রেমী। তাঁরাই কিছুদিন আগে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের স্লোগান 'জয় বাংলা' নিষিদ্ধ করেছেন। তাঁরাই ভারতবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরাই মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্ত ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাকে স্বাধীনতা উদযাপন বলে রায় দিয়েছেন।'
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস। মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাক সেনার আত্মসমর্পণের দিনটিতে নানা অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয় ফোর্ট উইলিয়ামে। সেখানে বাংলাদেশের কূটনীতিক আধিকারিক, সেনা কর্তা থেকে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা- সকলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের পর থেকে যেভাবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বেড়েছে, তার প্রভাব পড়েছে ঢাকা-নয়াদিল্লি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও। শোনা যাচ্ছিল, এবার বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের ছাড়াই বিজয় দিবস পালিত হতে পারে ফোর্ট উইলিয়ামে। যদিও পরে জানা যায়, এবারও ফোর্ট উইলিয়ামে দেখা যাবে বাংলাদেশ প্রশাসনের প্রতিনিধিদের।
উল্লেখ্য, প্রত্যেক বছরেই ফোর্ট উইলিয়ামে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেদেশের সেনাকর্তারাও সপরিবারে কলকাতায় এসে যোগ দেন বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে। তার পরে কলকাতায় ঘুরতে তাঁদের জন্য বিশেষ ট্যুরের ব্যবস্থাও করা হয়।