shono
Advertisement

শ্রমিকদের ধর্মঘটে বাংলাদেশে বন্ধ নৌ পরিষেবা, স্তব্ধ পণ্য আমদানি-রপ্তানি

শ্রমিকদের দাবি মানা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছে নৌযান মালিক সমিতি।
Posted: 03:53 PM Nov 27, 2022Updated: 03:53 PM Nov 27, 2022

সুকুমার সরকার, ঢাকা: একাধিক দাবিতে ধর্মঘটে নৌযান শ্রমিকরা। যার জেরে বাংলাদেশে বন্ধ নৌকো ও লঞ্চ চলাচল। যার জেরে চূড়ান্ত ভোগান্তিতে যাত্রীরা। বন্ধ রয়েছে পণ্য পরিবহণ অর্থাৎ আমদানি-রপ্তানি।

Advertisement

বিমান-রকেটের যুগেও নদীমাতৃক বাংলাদেশে যাতায়াতের অন্যতম বাহন নৌকো ও লঞ্চ। এবার মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘটে নেমেছে নৌ শ্রমিকরা। ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা মজুরি বৃদ্ধি, কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা-সহ ১০ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ। গতকাল শনিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতিতে স্থানীয় ও দূরপাল্লার রুটের নৌযান চলাচল বন্ধ। ধর্মঘটীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক প্রদান ও সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ-সহ ১০ দফা। শনিবার পূর্বনির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হওয়ায় রাত ১২টা থেকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা। কেন্দ্র ঘোষিত এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে বরিশাল, চট্টগ্রাম বন্দর-সহ দেশের সব নৌপথে ধর্মঘট চলছে। তাঁদের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে- বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের উপরে ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহণ নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করে সকল লাইটারিং জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ-পরিবহণ অধিদপ্তরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।

[আরও পড়ুন: রাতের কলকাতায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, দাউদাউ করে জ্বলছে টেরিটি বাজারের শতাব্দীপ্রাচীন বাড়ির একাংশ]

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, “রাত ১২টা থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালন শুরু করেছে সারা বাংলাদেশের নৌযান শ্রমিকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এই মুহূর্তে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন নৌযান মালিক সমিতির নেতারা।” রবিবার সকালে বরিশাল নদী বন্দরে যাত্রীদের দেখা গেছে। নৌযান বন্ধ থাকায় গন্তব্যে যেতে না পেরে ফিরে গেছেন অনেকে। অনেকে আবার বিকল্প ব্যবস্থায় অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে গন্তব্যে গেছেন। 

ভোলা যাওয়ার উদ্দেশ্যে লঞ্চ ঘাটে আসা যাত্রী মো. আতিকুল্লাহ জানান, “অফিসিয়াল কাজে ভোলায় যেতে হবে। এখন লঞ্চ না চলায় দুর্ভোগে পড়ে গেলাম। অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বিকল্প পথে যেতে হবে।” বরিশালগামী এক যাত্রী জানান, “আজকে লঞ্চ, কালকে বাস ধর্মঘট এইরকম চলতে থাকলে তো জনগণের দুর্ভোগের শেষ নাই।” এরকম অনাকাঙ্খিত ধর্মঘট বন্ধ করার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বারবার বেতন বাড়ানোর আশ্বাস দেয়া হলেও নৌযান শ্রমিকদের বেতন বাড়েনি বলে অভিযোগ শ্রমিক নেতাদের। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন তারা। বাংলাদেশ লঞ্চ শ্রমিক সংগঠনের বরিশাল বিভাগের সভাপতি শেখ আবুল হাশেম জানান, যুক্তিযুক্ত দাবিতে শ্রমিকদের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। চুক্তি করেও তা বাস্তবায়ন করেনি সরকার এবং মালিক পক্ষ। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলবে।

[আরও পড়ুন: বার অ্যাসোসিয়েশনের ফর্মে বঞ্চিত ‘একলা মা’! প্রতিকার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ আইনজীবী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement