সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গা (Rohingya) সংকট সমাধানে নাজেহাল বাংলাদেশ (Bangladesh)। প্রায় ১১ লক্ষ শরণার্থীর বাসস্থান ও অন্ন সংস্থান করতে গিয়ে চাপ বেড়েছে দেশের অর্থনীতির উপর। এহেন পরিস্থিতিতে পাশে থাকার আশ্বাস দিল জাপান (Japan)।
[আরও পড়ুন: ‘হাসপাতালে জায়গা থাকবে না’, করোনা নিয়ে সতর্কবার্তা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর]
এই অঞ্চলে আগামীদিনে স্থিতিশীলতা আনতে রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদি ও চিরস্থায়ী সমাধান খুঁজছে জাপান। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেছেন, “জাপান এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।” রবিবার ঢাকায় ‘বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক: ভবিষ্যতের পূর্বাভাস’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সভায় জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, “রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য সক্রিয় পরিবেশ তৈরি করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে জাপান। এবং যখনই উপযুক্ত সময় আসবে, তখনই মায়ানমারের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে।” আলোচনায় রাষ্ট্রদূত ইতো আরও জানান, যখন তারা এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও শান্তির কথা বলেন, তখন মানবিক সহায়তা এবং মানবিক সংকট খুব বড় একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। গত ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর মায়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির কী হালহকিকত বা এই মুহূর্তে দেশটিতে কী ঘটছে তা অনুমান করা খুব কঠিন। মায়ানমার এখন কোন দিকে চলছে, সে সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট চিত্র নেই। এখন সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রকৃতপক্ষে কেউই সুস্পষ্ট ধারণা দিতে পারবেন না।
কক্সবাজার ও ভাসানচর রোহিঙ্গাদের শরণার্থী শিবির প্রসঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো বলেন, সেখানে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যুক্ত করা খুবই জরুরি। ভাসানচর ও কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবিরে উভয়ের জন্য একটি বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রসংঘ শিগগিরই ভূমিকা রাখবে বলে জাপান আশা করছে। তিনি আরও বলেন, শরণার্থী সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধানের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভাসানচর প্রকল্পটি সফল হতে চলেছে। অন্যথায় পুরো প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হতে পারত। বলে রাখা ভাল, কক্সবাজার ও ভাসানচরে প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির মাধ্যমে জাপান রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ১৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে। জাপানের বিদেশমন্ত্রী মোতেগি তোশিমিৎসু এবং মায়ানমারে রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রানার বারগেনার গত মে মাসে মায়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এর আগে গত মার্চ মাসে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনকালে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া মিশন রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।