সুকুমার সরকার, ঢাকা: রক্তস্নাত বাংলাদেশ। বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। দেশজুড়ে জারি কারফিউ। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছে সেখানে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের নিয়ে। তাঁরা চেষ্টা করছেন দেশে ফেরার। কেবল শুক্রবারই উত্তরপূর্বের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ফিরেছেন তিনশোর বেশি পড়ুয়া। জানা গিয়েছে, পড়ুয়াদের বেশিরভাগই ডাক্তারির ছাত্রছাত্রী। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মেঘালয়, জম্মু ও কাশ্মীরের মতো রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বাসিন্দার সংখ্যাই বেশি।
মূলত দুটি পথে ফেরানো হচ্ছে পড়ুয়াদের। ত্রিপুরায় আগরতলার কাছে আখুরা ও মেঘালয়ের ডাওকি আন্তর্জাতিক স্থল বন্দর। পড়ুয়ারা জানাচ্ছেন, তাঁরা প্রথমেই বাংলাদেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেননি। আন্দোলন শুরুর পরও পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছিলেন। কিন্তু ক্রমশই যেভাবে আন্দোলনে লেগেছে রক্তের ছিটে এবং বহু জায়গায় জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা, এর পর আর সেখানে থাকতে চাননি তাঁরা। কিন্তু বিমানের টিকিট না মেলায় স্থলপথ দিয়েই সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ফিরেছেন তাঁরা। হরিয়ানার পড়ুয়া আমির এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানাচ্ছেন, ''ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। বিমানের টিকিটও পাচ্ছিলাম না। তাই স্থলপথে আগরতলা হয়েই ফিরে এলাম।''
[আরও পড়ুন: দোকানে থাকতে হবে মালিকের নাম, এবার কানোয়ার যাত্রার সব রুটেই নির্দেশিকা জারি যোগীর]
তবে বাংলাদেশে থাকা প্রত্যেক ভারতীয়ই নিরাপদ রয়েছেন বলেই জানিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। পরিজনদের আশ্বস্ত করে বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, প্রত্যেকেই সুস্থ রয়েছেন। ভারতীয় ও ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য পরামর্শ বার্তা জারি করা হয়েছে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে। গণপরিবহণ এড়াতে ও বাইরে যতটা সম্ভব কম বেরোতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে পুরো বাংলাদেশে (Bangladesh) কারফিউ জারি করে সেনা নামিয়েছে হাসিনা সরকার। শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (সংবাদমাধ্যম) ফারুক হোসেন ঘোষণা করেন যে, শুক্রবার দুপুর থেকেই পরবর্তী নির্দেশ ঘোষণা না-হওয়া পর্যন্ত রাজধানীতে সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। এই উত্তেজনাকর অবস্থার মধ্যেই আরও অন্তত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বেসরকারি সূত্রে খবর। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০৫-এ।