shono
Advertisement
Bangladesh

খুন করে ভারতে পালিয়েছিল সইফের হামলাকারী! বাংলাদেশে হত্যা, ছিনতাই-সহ রয়েছে একাধিক মামলা

বহুদিন ধরেই অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 08:38 PM Jan 20, 2025Updated: 08:38 PM Jan 20, 2025

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: ধরা পড়েছে বলিউড অভিনেতা সইফ আলি খানের হামলাকারী। জেরায় তদন্তকারীরা জেনেছেন ধৃত আততায়ী ভারতীয় নয়। আদতে বাংলাদেশের নাগরিক। এবার জানা গেল, এই হামলাকারীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের খুন-সহ একাধিক মামলা রয়েছে। বহুদিন ধরেই অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত। অভিযোগ, বাংলাদেশেই এক ব্যক্তিকে খুন করে ভারতে পালিয়ে যায় সে। এরপর মুম্বইতে গিয়ে অভিনেতার বাড়িতে ঢুকে এই কাণ্ড ঘটায় সে। 

Advertisement

গত ১৬ জানুয়ারি, রাত ১টা ৩৭ মিনিট নাগাদ সইফের বাড়িতে ঢোকে আততায়ী। তার ছুরির আঘাতেই গুরুতর আঘাত হন ‘ছোটো নবাব’। হামলাকারীকে খুঁজতে চিরুনি তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের খবর দেখে আতঙ্কিত হয়ে যায় আততায়ী। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে একাধিক নাম ভাঁড়িয়ে গা ঢাকা দেয়। অবশেষে গোপনসূত্রে খবর পেয়ে আততায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে তার আসল নাম মহম্মদ সরিফুল ইসলাম শেহজাদ। রবিবারই তাকে মুম্বই আদালতে পেশ করা হয়। আপাতত ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছে অভিযুক্ত।

এই খবর ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশেও। টিভিতে শেহজাদের ছবি দেখে চিনতে পারেন আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা। সূত্রের খবর, হত্যা-সহ একাধিক মামলার আসামি শেহজাদ। বাংলাদেশে শাস্তি এড়ানোর জন্য ভারতে পালিয়ে যায়। অভিযুক্ত শেহজাদ দক্ষিণ জনপদ জেলা ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, শেহজাদের বাবা মহম্মদ রুহুল আমিন ফকির একসময় খুলনা মিলে চাকুরি করতেন। তিন ছেলের মধ্যে শেহজাদ দ্বিতীয়। তবে অনেক দিন ধরে পরিবারের সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ ছিল না। স্থানীয় থানা সূত্রে খবর, রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার পর নাকি এলাকায় কিছুদিন আত্মগোপনে ছিল। শেহজাদের বাবা রুহুল আমিন ফকির বলেন, "আমাদের সঙ্গে শেহজাদের কোনও যোগাযোগ নেই। শুনেছি সে ভারতে আটক হয়েছে। সে কবে ভারত গিয়েছে সেটাও আমরা জানিনা।" অভিযুক্তের ছোট ভাই সলমন ফকির জানান, তার মেজো ভাই শেহজাদ রফিকুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি এড়াতে ভারতে পালিয়ে যায়। এর আগে দেশে থাকাকালীন বেশ কয়েকবার পুলিশের হাতে আটক হয়েছে সে। তবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরে তার সঙ্গে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কোনও যোগাযোগ আছে কি না সেটা জানেন না সলমন ফকির।

এদিকে, অভিযুক্ত শেহজাদের প্রতিবেশী রহিমা আক্তার ও রিন্টু হাওলাদার জানান, তার চলাফেরা একরোখা ধরনের ছিল। কোনও কাজ করলে কি হবে সেটা নিয়ে ভাবতো না। যে কারণে সে বহুবার পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। খুব কম বয়সে বিয়ে করেছিল তবে সেই সংসার বেশিদিন টেকেনি। শেহজাদের কোনও সন্তান নেই। চুরি, ছিনতাই, হত্যা-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সে লেখা পড়া করেনি। এলাকায় একাধিকবার বিভিন্ন কারণে জনতার হাতে গণপিটুনির শিকারও হয়েছে। এছাড়া পরিবারের অজান্তে বেশ কয়েকটি বিয়েও করেছিল। এনিয়ে নলছিটি থানা ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক (ওসি) মো. আব্দুস সালাম জানান, "২০১৭ সালে নলছিটির মোল্লারহাট স্টিল ব্রিজের কাছে ভাড়ায় মোটরবাইক চালক রফিকুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় শেহজাদকে আসামি করা হয়। এ ঘটনার পরে সে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। আমাদের কাছে এখনও কোনও বার্তা আসেনি। তবে শেহজাদের বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় এবং ঢাকায় হত্যা মামলা রয়েছে। সে ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ আছে।"

সইফের ঘটনায় তদন্তকারীদের দাবি, ধৃত শেহজাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা বেশ কিছু নথিপত্র ইঙ্গিত মেলে সে বাংলাদেশি। ৪-৫ মাস আগে নিজেকে বিজয় দাস নামে পরিচয় দিয়ে মুম্বইতে থাকতে শুরু করে বলে অভিযোগ। যদিও ধৃতের আইনজীবীর দাবি, সে বাংলাদেশি নয়। এই ভারতেরই নাগরিক। বহু বছর ধরে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে মুম্বইতে থাকে সে। তবে কোন উদ্দেশ্যে অভিনেতার উপর হামলা চালিয়েছে ধৃত, তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যেভাবে শেহজাদের অপরাধের তালিকা পাওয়া গিয়েছে তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ধরা পড়েছে বলিউড অভিনেতা সইফ আলি খানের হামলাকারী।
  • জেরায় তদন্তকারীরা জেনেছেন ধৃত আততায়ী ভারতীয় নয়। আদতে বাংলাদেশের নাগরিক।
  • এবার জানা গেল, এই হামলাকারীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের খুন-সহ একাধিক মামলা রয়েছে।
Advertisement