সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম আছে। কিন্তু কমিশনের পোর্টালে ওই নাম উধাও। এদিকে এসআইআর আতঙ্কে রাজ্যে একাধিক বাসিন্দা মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে ঘোর বিপাকে দুর্গাপুর ইস্পাতনগরীর দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভার ৪১ জন ভোটার। এই বিধানসভায় নাকি ২৯১ এর জনের নাম নেই ২০০২ সালের ভোটার তালিকায়। ঘোর চক্রান্ত করে বাদ দেওয়া হচ্ছে নাম, নির্বাচন কমিশনকে তোপ রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের। নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করলেন তিনি।
এসআইআর ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে 'আত্মহত্যা', 'আত্মহত্যার চেষ্টার' মতো গুরুতর অভিযোগ উঠছে। রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদে নেমেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এসআইআরের প্রতিবাদের কলকাতার রাজপথে মিছিলও করেছেন। দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভা এলাকাতেও নাম নেই ২৯১ জনের। নতুন করে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভার ভারতী এলাকায়। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২১২ নম্বর বুথের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় এলাকার ৪১ জন ভোটারের নাম থাকলেও নির্বাচন কমিশনের পোর্টালে নাম নেই। আতঙ্কে তাঁরা।
দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক এবং জেলাশাসকের কাছেও তাঁরা অভিযোগ জানিয়েছেন। এই অভিযোগ পেয়ে রবিবার সকালে ওই এলাকায় পৌঁছন রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের দুর্গাপুর ১নম্বর ব্লকের সভাপতি রাজীব ঘোষ-সহ এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব। ভোটার তালিকায় আছে অথচ নির্বাচন কমিশনের পোর্টালে নাম না থাকা ভোটারদের সঙ্গে কথা বললেন মন্ত্রী। পোর্টালে নাম না থাকা এক বাসিন্দা সঞ্জয় সেন বলেন, "১৯৯৬ সাল থেকে আমি এখানে রয়েছি। এখানেই ভোট দিতাম। কিন্তু এখন নির্বাচন কমিশনের পোর্টালে দেখছি আমাদের নাম নেই। অথচ আমাদের কাছে রয়েছে ২০০২ সালের ভোটার তালিকার হার্ড কপি। সেখানে নাম রয়েছে। নির্বাচন কমিশনার বলেছেন কোন যোগ্য ভোটারদের যেন নাম বাদ না যায়। সেখানে দেখা যাচ্ছে আমাদের নামই বাদ রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ঠিক নেই।"
রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, "২০০২ সালে নির্বাচন কমিশন নাম তোলার সময় কারচুপি করেছে। অনেক ভোটারদের নাম বাদ দিয়ে দিয়েছে।" তাঁর অভিযোগ, "কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সঙ্গে চক্রান্ত করেছে নির্বাচন কমিশনও। সেজন্যই হাজার হাজার নাম বাদ যাচ্ছে। মানুষজন হয়রানির শিকার হচ্ছেন।" তিনি আরও বলেন, "আমরাও এলাকায় এলাকায় প্রতিবাদ করছি। নির্বাচন কমিশনের কাছেও জবাব চাইতে যাব।" বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘড়ুই পালটা অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেস এসআইআর নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। একজনও ভারতীয় নাগরিকের নাম বাদ যাবে না।" দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন," বিষয়টি কমিশনকে জানাব। তবে অযথা আতঙ্কের কারণ নেই। যেহেতু ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় নাম আছে, তাই এমুনারেশন ফর্ম তাঁরা পাবেন। পরে শুনানি করে নতুন তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্তি করা হবে।"
