অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: ঋণের দায়ে জর্জরিত পরিবার! স্ত্রী, সন্তানকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার সকালে শিলিগুড়ির উত্তর সমরনগর এলাকার ভাড়াবাড়ি থেকে তিনজনের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তদন্তে ভক্তিনগর থানার পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর সমরনগর এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন শ্যামল রায়, টুম্পা রায়। সাত বছর আগে বিয়ে হয়। তাঁদের একমাত্র সন্তান পিন্টু রায়। বয়স ৪-৫ বছর। বিয়ের পর থেকেই এই এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন তাঁরা। শ্যামলবাবু পেশায় রাজমিস্ত্রি। টুম্পাদেবী একটি দোকানে চপ ভাজতেন। এলাকায় সজ্জন পরিবার হিসেবেই পরিচিত। এদিন সকাল থেকে টুম্পাদেবীকে ফোন করে পাননি তাঁর বাবা কালীপদ রায়। এরপর মেয়ের বাড়িতে ছুটে এসে দেখেন দরজা বন্ধ। দরজা ধাক্কা দিতে থাকেন।। কিন্তু কেউ খোলেনি। এরপর জানালা দিয়ে দেখেন জামাইয়ের ঝুলন্ত দেহ। খবর যায় পুলিশের কাছে। তারা এসে দেখেন, স্ত্রী ও সন্তানের দেহ পড়ে রয়েছে ঘরে। ঝুলছে শ্যামলবাবুর দেহ।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, স্ত্রীকে প্রথমে গলা কেটে খুন করেন শ্যামল। তারপর সন্তানকেও একইভাবে খুন করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন শ্যামল। চপের দোকানের ব্যবসা বড় করার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। তাই বাজার থেকে প্রায় দু-আড়াই লক্ষ টাকার দেনা হয়ে গিয়েছিল তাঁর। ধার মেটাতে না পেরেই চরম পথ বেছে নিলেন।
এ প্রসঙ্গে কালীপদ রায় জানান, "৭ বছর হল বিয়ে হয়েছে। মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে কোনও অশান্তি ছিল না। কিন্তু এত টাকা ধার হয়ে যাওয়ার পর শোধ দিতে না পারায় মানসিক টানাপোড়েনে ভুগছিল জামাই। আজ সকাল থেকে মেয়েকে ফোন করছিলাম। ধরেনি। তারপর এসে দরজায় ধাক্কা দেওয়ার পর কেউ খোলেনি। তারপর দরজা ভেঙে ঢুকে দেখি দেহ পড়ে রয়েছে।" স্থানীয় বাসিন্দা লতিকা রায় জানান, "সাত-আটমাস এখানে ভাড়া থাকত। কখনও অশান্তি হতে দেখিনি। শুনছি তো বাজারে দেনা হয়ে গিয়েছিল। তবে সঠিকভাবে কিছু বলতে পারব না।" পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে।