হাবিব তনভীর, রামপুরহাট: রবিবাসরীয় সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সোনালি বিবির সঙ্গে দেখা করলেন অনুব্রত মণ্ডল। শুক্রবার সন্ধ্যায় মালদহ সীমান্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন দীর্ঘদিন বাংলাদেশে আটকে থাকা সোনালি বিবি। সেখান থেকে শনিবার দুপুরে বীরভূমের দর্জিপাড়ায় ফেরেন। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে কান্নায় ভেঙে পড়েন সোনালি বিবি। বর্তমানে যদিও রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সোনালি বিবি। সেখানেই এদিন সকালে ফল-মিষ্টি ও নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান অনুব্রত মণ্ডল। সঙ্গে ছিলেন লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ রানা। জানা যায়, বাংলাদেশে কীভাবে সোনালি বিবির বিভীষিকার দিন কেটেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেন তৃণমূল নেতা।
অন্যদিকে রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশেষ নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে সোনালি বিবিকে। তাঁর জন্য গঠন করা হয়েছে ছয় সদস্যের বিশেষ মেডিক্যাল টিম। এই দলে রয়েছেন প্রসূতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক পিকলু চৌধুরী, শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অনিশ চট্টোপাধ্যায়, মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ ইন্দ্রাণী দাস, অ্যানেস্থেসিওলজির সহকারী অধ্যাপক ডঃ অরূপ ঘোষ, অতিরিক্ত মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডঃ ঈশ্বর চট্টোপাধ্যায়-সহ একাধিক চিকিৎসক।
হাসপাতালের এমএস-ভিপি পলাশ দাস জানিয়েছেন, "সোনালির সমস্ত শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।'' চিকিৎসকের কথায়, ''সামান্য রক্তশূন্যতা ছাড়া বড় কোনও সমস্যা নেই। কয়েকদিন ওষুধ খেলেই রক্তশূন্যতা স্বাভাবিক হবে।'' তবে এখনই প্রসবের কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন এবএসভিপি পলাশ দাস। সবকিছু ঠিক থাকলে খুব শীঘ্রই সোনালি বিবিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বলে রাখা প্রয়োজন, বাংলায় কথা বলায় বাংলাদেশি তকমা দিয়ে অন্তঃসত্ত্বা সোনালির পরিবার-সহ ছয়জনকে দিল্লি পুলিশ বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। পরে অসম সীমান্ত দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলে ঠাঁই হয় সোনালি বিবি-সহ ছয়জনের। তারপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তাঁদের ফেরাতে তৎপরতা শুরু হয়। সঙ্গে চলে আইনি লড়াই। প্রায় ৮ মাস পর মালদহের মহদিপুর সীমান্ত দিয়ে নাবালক সন্তানকে নিয়ে নিজের দেশে সোনালি ফিরলেও বাংলাদেশে রয়ে গিয়েছেন তাঁর স্বামী-সহ চারজন।
