রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় ৯০ দিনেও ধৃত সন্দীপ ঘোষ, অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিতে পারেনি সিবিআই। সেই কারণে শুক্রবার তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেছে শিয়ালদহ আদালত। যা সিবিআই ৯০ দিনেও পারেনি, তা মাত্র ৫২ দিনে করতে সক্ষম হল আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। জয়গাঁয় সাত বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ৫২ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দিল জেলা পুলিশ। শুক্রবার আলিপুরদুয়ার আদালতে এই চার্জশিট জমা পড়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া চারজনই এই ঘটনায় অভিযুক্ত বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। ৫২ দিনের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়ার ঘটনায় জেলা পুলিশের প্রশংসা করছে বিভিন্ন মহল। আলিপুরদুয়ারের জেলা পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই গুরুত্ব দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করেছি। চারজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছি। চার্জশিটে তদন্তের বিস্তারিত রয়েছে।“
গত ১৪ অক্টোবর জয়গাঁর বাসিন্দা সাত বছরের এক নাবালিকাকে চাউমিন খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও খুন করা হয়। প্রমাণ লোপাটের জন্য মৃত নাবালিকার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। ২২ অক্টোবর নেপাল সীমান্ত থেকে এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত পঞ্চাশ বছরের বাবলু মিঞাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই দিনই পুলিশের আরেকটি দল জয়গাঁর ডালডাবাড়ি এলাকা থেকে আধপোড়া নাবালিকার দেহটি উদ্ধার করে। এছাড়া ওই দিন এই ঘটনায় যুক্ত আরো দুই জন মণির হোসেন ও জয়রুল ইসলাম গ্রেপ্তার হয়। তাদের বয়স যথাক্রমে ৫৭ ও ৪১ বছর। পরের দিন ২৩ অক্টোবর এই ঘটনায় যুক্ত আরও একজন মজিবুল ইসলামকেও জালে আনে পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া এই চারজনই ঘটনার নাবালিকা ধর্ষণ, খুন ও মৃতদেহে আগুন ধরিয়ে প্রমাণ লোপাটের দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বলে চার্জশিটে উল্লেখ করেছে পুলিশ। জেলা পুলিশের এই ভুমিকায় খুশি বিভিন্ন মহল। যদিও জেলা সিপিএমের সম্পাদক কিশোর দাসের বক্তব্য, “দ্রুত চার্জশিট জমা দেওয়াটা বড় কথা নয়। এই চার্জশিট দুর্বল কিনা সেটা দেখতে হবে। দোষীরা শাস্তি পায় কিনা, সেটাই বিষয়।'' তবে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনাকে দৃষ্টান্ত করে মুখ্যমন্ত্রীর পেশ করা 'অপরাজিতা বিল'কে গোটা দেশে অনুসরণ করার দাবি তুলেছে। শাসকদলের তরফে রাজ্যের মুখপাত্র তথা আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, “আর জি করে পুলিশ চারদিনে যা করেছিল, সিবিআই ৯০ দিনে তার বাইরে যেতে পারল না। অথচ জয়গাঁতে পুলিশ ৫২ দিনে চার্জশিট জমা করল। এই ঘটনাতে চারজন গ্রেপ্তারও হয়েছে। দোষীরা কঠোর শাস্তি পাবে। মুখ্যমন্ত্রীর পেশ করা অপরাজিতা বিল গোটা দেশে দৃষ্টান্ত হোক।''