অভিষেক চৌধুরী, কালনা: এসআইআর আবহে রাজ্যে একের পর এক মৃত্যুর অভিযোগ। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা। এই আবহে অসুস্থ হয়ে পড়লেন এক ব্যক্তি। গাড়ি চালানোর সময় হৃদরোগে আক্রান্ত কালনার বাসিন্দা ক্ষিতীশ শর্মা। পরিবারের অভিযোগ, এসআইআর প্রক্রিয়া ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে ছিলেন। মানসিক চাপ বাড়ছিল। যার জেরে এই পরিস্থিতি। আপাতত বাড়িতে শয্যাশায়ী অবস্থায় রয়েছেন ক্ষিতীশবাবু। নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন তিনি। এই অবস্থায় চরম সমস্যায় পড়েছে পরিবার। সরকারি সাহায্যের আবেদন জানাতে শনিবার ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হন অসুস্থ ব্যক্তির পরিবার। ইতিমধ্যে পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন পুরকর্তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে কালনার মহাপ্রভু পাড়া এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন ক্ষিতীশ শর্মা। পেশায় গাড়িচালক। তাঁর উপরে নির্ভর করে চলে দুই মেয়ে, স্ত্রী। পরিবারে রয়েছেন আরও কয়েকজন সদস্য। একদিকে মেয়েদের পড়াশোনার খরচ অন্যদিকে সংসার চালানো সবটাই একহাতেই সামলাতেন ক্ষিতীশবাবু। পরিবারের দাবি, ''২০০২ সালের ভোটের তালিকায় ক্ষিতীশবাবুর নাম নেই। তাঁর বাবা-মা ছোটবেলায় মারা যাওয়ায় তাঁদেরও নাম পাচ্ছেন না।'' যা নিয়ে ক্রমশ বাড়তে থাকে আতঙ্ক, মানসিক চাপ! এই পরিস্থিতিতে গত ২৯ শে অক্টোবর গাড়ি চালানো অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন ক্ষিতীশ শর্মা। তড়িঘড়ি কালনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও চিকিৎসক আগামী দু'মাসের জন্য তাঁকে বিশ্রামে নিতে বলেছেন। বর্তমানে সংসার কি করে চলবে সেই ভেবেই চিন্তায় ওই পরিবার। তাই শনিবার ওই ব্লক প্রশাসনের কাছে সরকারি সাহায্যের আবেদন জানায় পরিবারটি।
বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী, ক্ষিতিশবাবুর মেয়ে রাইমা শর্মা বলেন, “এসআইআর আতঙ্কে বাবার স্ট্রোক হয়। ২০০২ তালিকায় মায়ের নাম নেই। বাবারও নাম নেই মনে হয়। এর আগে ভোট দেয়নি। সেই নিয়েই চিন্তা বাড়ে। বাড়িতে বারবার বলে, নাম না থাকলে তাড়িয়ে দেবে। আতঙ্কের জেরে এই ঘটনা।” অসুস্থ ক্ষিতিশ শর্মা বলেন, “এসআইআর নিয়ে চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। যার কারণেই এই অসুস্থতা।” কালনা পুরসভার উপপুরপ্রধান তপন পোড়েল বলেন, “ এসআইআর আতঙ্কের জেরে এই ঘটনা। পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি।'' যে কোনও প্রয়োজনে সাহায্যের আশ্বাসও দেন কালনা পুরসভার উপপুরপ্রধান।
