শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়িতে শীতের সুর বেঁধে দিল পরিযায়ী পাখির দল। শীত জাঁকিয়ে পড়ার আগেই পাখির কলতানে মুখরিত জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন ভাটাখানা, শোভাবাড়ি এলাকা। বাসিন্দাদের দাবি, পরিত্যক্ত এই ইটভাটার জলাশয়ের কয়েক দশক থেকে শোভা বাড়িয়ে আসছে পরিযায়ী পাখির দল। প্রতি বছরই শীতের আগমনী বার্তা বয়ে আনে ওরা। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপ, ইউরেশীয়া, মঙ্গোলিয়া থেকে উড়ে আসে। এই বছর এখনও পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে চখাচখি, নর্দান টিল, নর্দার্ন ল্যাপ উইং, হ্যান হেরিয়ার, কমন মুরগন, বালিহাঁসের দল। প্রতি বছর পাখি দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ। তাদের ভিড়ে মিশে শিকারিরা যাতে অতিথি পাখিদের কোনও ক্ষতি করতে না পারে, সেজন্য সতর্ক গ্রামবাসীরা।
শীত পড়লেই বদলে যায় জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন শোভাবাড়ি গ্রামের ছবি। গ্রামের জলাশয় জুড়ে তখন পাখির কলতান। আকাশ বাতাস জুড়ে পাখির মিছিল। গত কয়েক বছর ধরে জলপাইগুড়ির শহর সংলগ্ন শোভাবাড়ি গ্রামের শোভা বাড়াচ্ছে শীতের দেশ থেকে আসা পাখির দল। স্থানীয় একটি ইটভাটার জলাশয়ে এসে রীতিমতো সংসার পেতে বসে রুডিশেল ডাক, কমন টিল, নর্দার্নটিলের মতো পরিযায়ী পাখির দল।পাখিদের নিরাপত্তায় দল বেধে পাহাড়া দেন বাসিন্দারা। লিপিকা সরকার নামে এলাকার এক গৃহবধূ জানান, একসময় পাখি শিকারিরা আসত। এখন গ্রামবাসীরা পাশা করে নজরদারি চালানোয় জলাশয়ের আশপাশে ঘেঁষার সাহস দেখায় না তারা। নিত্যানন্দ বর্মন নামে এক বাসিন্দা জানান, নভেম্বর মাস পড়তেই পাখির আসা শুরু হয়। নানা প্রজাতির পাখি আসে। পাখিদের জন্য এলাকা আলাদা করে পরিচিতি পেয়েছে। বহু মানুষ পাখি দেখতে আসেন। তা দেখে তাদেরও ভালো লাগে। তাদের অতিথি এই পাখিরা যাতে কোনও ভাবেই বিপদে না পড়ে, তারজন্য দিনরাত সতর্ক থাকেন তাঁরা।
গ্রামবাসীদের পাখি প্রেম দেখে মুগ্ধ পরিবেশ কর্মীরাও। জলপাইগুড়ি সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের সম্পাদক ডাঃ রাজা রাউত জানান, চখাচখি বা রুডেশেল ডাকের সঙ্গে নর্দার্ন টিল এবং কমনটিল নামে পরিযায়ী পাখিরা এখানে আসে। গ্রামবাসীদের আতিথেয়তায় প্রতি বছর এখানে পাখিদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই বছর জাঁকিয়ে শীত পড়ার আগেই পাখিরা আসতে শুরু করে দিয়েছে। যা এলাকায় পরিবেশের পক্ষে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
