বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: কথা দিয়েছিলেন আগামী মার্চেই বাড়িতে ফিরবেন! কিন্তু সে কথা আর রাখা হল না। গোয়ার অভিশপ্ত নৈশক্লাবের (Goa Nightclub Fire) অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বাগডোগরার বাসিন্দা সুভাষ ছেত্রীর। গত কয়েকবছর আগে সেফের কাজে গোয়ায় পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। চোখেমুখে ছিল একরাশ স্বপ্ন। ইচ্ছা ছিল একটা বাড়ি তৈরি করারও। কিন্তু মুহূর্তের আগুনে যে সব শেষ হয়ে যাবে তা কল্পনাতেও ভাবতে পারেননি। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা গোটা পরিবার। অন্যদিকে সুভাষের দেহ ফেরাতে ইতিমধ্যে গোয়া পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে শিলিগুড়ি কমিশনারেট। জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে গোয়া থেকে দেহ বিমানে মুম্বই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকে আনা হবে বাগডোগরা বিমানবন্দরে।
শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার রাকেশ সিং বলেন, "দেহ নিয়ে আসার জন্য গোয়া পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।" জানা গিয়েছে, বাগডোগরার চৌপুকুরিয়া বানুরছাট গ্রামে সুভাষের বাড়ি। কয়েক বছর আগে বাবা মনবাহাদুর ছেত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এরপর থেকে বানুরছাট গ্রামে মাকে নিয়ে থাকতেন সুভাষ। পরিবার সূত্রে খবর, বাড়তি রোজগারের আশায় গত দু'বছর আগে নাইটক্লাবে সেফের কাজ নিয়ে গোয়ায় পাড়ি দেন তিনি।
সোমবার ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা টঙ্কা ছেত্রী ৷ কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন প্রতিবেশীরা। সুভাষের দিদি উর্মিলা ছেত্রী বলেন, "গত পুজোয় দশমীতে ভাইয়ের আসার কথা ছিল। ছুটি না মেলায় আসতে পারেনি। বলেছিল আগামী বছর মার্চ মাসে আসবে। সেটা হল না।" এ কথা বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন উর্মিলাদেবীও। অন্যদিকে সুভাষের প্রতিবেশী ফাঁসিদেওয়ার হেটমুড়ি-সিঙ্গিঝোরা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিজয় মঙ্গর। তিনি বলেন, "বাড়ি তৈরির স্বপ্ন নিয়ে গোয়ায় কাজ করতে গিয়েছিল ছেলেটা। কিছুটা ঋণ নিয়ে জমিও কিনেছিলেন। কিন্তু সেই আশা আর পূরণ হল ন।''
বলে রাখা প্রয়োজন, শনিবার মাঝরাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায় গোয়ার অভিশপ্ত নাইটক্লাব। মর্মান্তিক মৃত্যু হয় অন্তত ২৫ জনের। সেই তালিকায় রয়েছেন সুভাষ ছেত্রীও। জানা যায়, অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
