সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমুদ্রের ভাঙনে দুশ্চিন্তা বাড়ছে গঙ্গাসাগরে। পাড় ভেঙে ক্রমশ এগিয়ে আসছে সমুদ্র। কপিলমুনির মন্দিরও আগামী দিনে সমুদ্রের তলায় চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা ওয়াকিবহাল মহলে। গঙ্গাসাগরের পাশাপাশি গোটা সুন্দরবনকে ভয়াবহ ভাঙন থেকে রুখতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিচ্ছে রাজ্য সরকার। এজন্য বিশেষজ্ঞ প্রযুক্তিবিদদেরও সাহায্য নেওয়া হবে। গঙ্গাসাগরের সমুদ্র ভাঙন রোখার জন্য নেদারল্যান্ডসের প্রযুক্তির দ্বারস্থ রাজ্য সরকার। গঙ্গাসাগরের কপিলমুনির মন্দিরের সামনে সমুদ্র ভাঙন পরিদর্শন করলেন নেদারল্যান্ডস থেকে আসা চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। সমুদ্রকে আটকাতে রিং বাঁধ তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে খবর।
কপিলমুনি মন্দির থেকে সমুদ্র সৈকতের দূরত্ব এই মুহূর্তে আনুমানিক প্রায় ২০০ মিটার। সমুদ্রের প্রবল ভাঙনের জেরে সাগরদ্বীপ এবং গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণও ক্রমশ ছোট হচ্ছে। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ গঙ্গাসাগর মেলায় হাজির হন দূরদূরান্ত থেকে। কিন্তু ফি বছরই সাগরতটের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙনের কবলে পড়ে। ফলে দুশ্চিন্তাও বাড়ছে এই এলাকা নিয়ে। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
এলাকা পরিদর্শন করছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র
নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্যের সেচ দপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে ভাঙন রাখার জন্য একাধিক বৈঠক হয়। এই ভাঙন রোধ করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে বলে জানা গিয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১০০ মিটার এবং সমুদ্রগর্ভ থেকে ৩০০ মিটার এলাকা নিয়ে একটি কংক্রিটের রিংবাঁধ তৈরি করা হবে। বিশালাকার ঢেউগুলিকে উপকূলে আসার আগেই ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। ফলে সরাসরি উপকূলে আর আঘাত করতে পারবে না সমুদ্র। ফলে ভূমিক্ষয় অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধি দলের এক সদস্য তেমনই জানিয়েছেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে গঙ্গাসাগরে ভাঙন রোধ করা হবে। এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের আধিকারিকেরা। ১ থেকে ৬ নম্বর স্নানঘাট পর্যন্ত স্থায়ী কংক্রিটের নদী বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এজন্য একশো কোটি টাকা খরচের কথাও জানানো হয়েছে। এই কাজ শেষ হতে দু'বছর সময় লাগবে। এ বিষয়ে গঙ্গাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হরিপদ মণ্ডল জানান, প্রতি বছর মাটি দিয়ে অস্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ ফলশ্রুত হচ্ছে না। কংক্রিটের বাঁধ একমাত্র সমাধানসূত্র।
