সুমন করাতি, হুগলি: পড়াশোনায় ভালো। বিএড শেষ করে চাকরির খোঁজে ব্যস্ত ছেলে। এমনিতে চুপচাপ। মাঝেমধ্যে অ্যালুমিনিয়াম কারখানায় কাজ করত। সেই ছেলে কি না জঙ্গি! তাও আবার কুখ্যাত জইশ-ই-মহম্মদের সঙ্গে যুক্ত! শুক্রবার সকালে এনআইএ আরামবাগে অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সন্দেহে ছেলেকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় যারপরনাই বিস্মিত সাবিরউদ্দিনের পরিবার। বার বার সকলে বলছেন, ছেলে নিরীহ। তাঁকে কেউ বা কারা ফাঁসিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সকালে। আরামবাগের সানাপাড়া থেকে এক যুবককে জঙ্গি সন্দেহে পাকড়াও করে এনআইএ। তার নাম সাবিরউদ্দিন। এনআইএ-র সন্দেহ, পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের সঙ্গে যুক্ত সে। তাকে কলকাতার এনআইএ অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সাবিরউদ্দিনের বাড়ি থেকে বেশ কিছু পরিমাণ টাকা, মোবাইল এবং ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সাবিরউদ্দিনের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগ রয়েছে, এই অভিযোগ কিছুতেই মানতে পারছে না পরিবার, প্রতিবেশীরা।
সাবিরউদ্দিনের ঠাকুমা রিজিয়া খাতুন বলছেন, ''ওরা (এনআইএ) বার বার বলছিল, দরজা খুলে দিতে। ঢুকে সমস্ত ঘর তছনছ করতে শুরু করে। আমরা বললাম যে অসুস্থ। এত ঝামেলা নিতে পারব না, হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাবে। কিছুতেই কিছু শুনল না। বার বার সাবিরের খোঁজ করছিল। আমরা ওর সম্পর্কে সব তথ্য দিলাম। ছেলে চুপচাপ। পড়াশোনা করত নিজের মতো। ঘরেই থাকত। শুধু নিজের পড়াশোনা চালানোর জন্য মাঝেমধ্যে কাজ করত বাইরে।'' কান্নাকাটি শুরু করেন তাঁরা।
মা-পিসির দাবি, সাবিরউদ্দিন পড়াশোনায় ভালো। বিএড শেষ করে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিল। কলকাতায় মাঝেমধ্যে অ্যালুমিনিয়ামের কাজ করত। বাকি সময় ঘরেই থাকত। চুপচাপ স্বভাবের সাবিরউদ্দিন পাড়ায় খুব একটা মিশত না। এহেন ছেলে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে - তা শুনে হতবাক এলাকার মানুষ। সূত্রের খবর, জইশ-ই-মহম্মদের অন্যতম মাথা সুলতান সালাউদ্দিন আয়ুবীকে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করেছে এনআইএ। সাবিরউদ্দিনের সঙ্গে আয়ুবীর যোগ রয়েছে বলে মনে করছে এনআইএ। ওই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে। যদিও পরিবারের দাবি, তাদের নিরীহ ছেলেকে কেউ ফাঁসিয়েছে।