অর্ক দে, বর্ধমান: কখনও শতাব্দীপ্রাচীন বর্ধমান স্টেশনের চাঙড় ভেঙে পড়েছে। কখন ভেঙে পড়েছে বিশাল জলের ট্যাঙ্ক। পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে বারবার। যার জেরে প্রাণহানিও হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় ফের ট্রেন ধরার হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট একাধিক। একনজরে দেখে নিন 'অভিশপ্ত' বর্ধমান স্টেশনের গত কয়েকবছরের বিপর্যয়গুলি।
১২ অক্টোবর, ২০২৫- রবিবার সন্ধ্যায় ৪, ৬ ও ৭ নং প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিল তিনটি ট্রেন। তা ধরার জন্য তাড়াহুড়ো করে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন যাত্রীরা। সংকীর্ণ সিঁড়িতে ভিড় বাড়তে থাকে। তাতেই পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী আহত অন্তত ৭ জন।
১২ অক্টোবর, ২০২৫। বর্ধমান স্টেশনে হুড়োহুড়ি।
২৯ জানুয়ারি, ২০২৪- বর্ধমান স্টেশনের মূল প্রবেশ দ্বারের সঙ্গেই রয়েছে আরএমএস বিল্ডিং। অন্যান্যদিনের মতোই ওইদিন সকালে সেখানকার কর্মীরা গিয়ে দেখেন ভেঙে পড়েছে চাঙড়। ঘরময় ছড়িয়ে ছিটিয়ে চাঙড়ের টুকরো। তবে দুর্ঘটনার সময় অফিসে কেউ না থাকায় বড়সড় কোনও অঘটন ঘটেনি।
আরএমএস বিল্ডিংয়ে ছড়িয়ে চাঙড়ের টুকরো।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩- দুপুরে বর্ধমান স্টেশনের ১৩৩ বছরের প্রাচীন জলের ট্যাঙ্ক হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। স্টেশন চত্বরে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে। প্রাণ হারান তিনজন। রেলের তরফে মৃতদের ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। বেশি জখমদের ৫০ হাজার টাকা ও স্বল্প আঘাতপ্রাপ্তদের ৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয় পূর্ব রেল। পাশাপাশি, এই দুর্ঘটনার তদন্তে রেলের তরফে তিন সদস্যর উচ্চপর্যায়ের কমিটিও গঠন করা হয়। একইদিনে ঘটেছিল পদপিষ্টের ঘটনা, জখম হয়েছিলেন ২ জন।
জলের ট্যাঙ্ক বিপর্যয়।
৭ জুন, ২০২০- বর্ধমান স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে পোর্টিকোর ফলস সিলিং ভেঙে পড়ে আহত হন তিন পরিযায়ী শ্রমিক। তবে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
ভেঙে পড়েছে ফলস সিলিং।
৪ জানুয়ারি, ২০২০- বর্ধমান স্টেশনের প্রবেশপথে অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনের বারান্দার একাংশ ধসে পরে। এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। জখম হন আরও একজন।
৮ নভেম্বর, ২০১৯- পাশাপাশি প্ল্যাটফর্ম ৪ ও পাঁচ নম্বরে ট্রেন ঘোষণা হয়েছিল একইসঙ্গে। ওভারব্রিজ দিয়ে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। জখম হয়েছিলেন কমপক্ষে ১৫ জন।
কেন বারবার বিপর্যয় বর্ধমান স্টেশনেই? নেপথ্যে রেলের ঔদাসীন্যতাকেই দায়ী করছেন অনেকে। প্রশ্ন উঠছে রেলের ভূমিকা ও যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে।
