শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: খুন, লুটপাট, স্থানীয়দের উপর অত্যাচার। সম্প্রতি পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে গা ঢাকা। নানা সমাজবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত সাজ্জাক ছিল করণদিঘির 'ত্রাস'। এনকাউন্টারে সাজ্জাকের মৃত্যুতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন স্থানীয়রা।
করণদিঘি ছোট শাওয়ার এলাকার বাসিন্দা সাজ্জাক আলম। বয়স বছর পঁচিশ। সেভাবে পড়াশোনা করেনি। পরিবারের অবস্থাও তেমন ভালো নয়। অল্প বয়সেই অপরাধ জগতে হাতেখড়ি। প্রথম প্রথম ছোটখাটো চুরির ঘটনা দিয়ে হাত পাকায়। এরপর ২০১৯ সালের অক্টোবর। অষ্টমীর রাতে করণদিঘির এসবিআই ব্যাঙ্কের কাছে পোলট্রি ফার্মের মালিকের কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা লুট করে। খুনও করা হয় করণদিঘির খিড়কিতলার বাসিন্দা পোলট্রি ফার্মের মালিককে। পরের বছরই গ্রেপ্তার হয় সাজ্জাক। তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ইসলামপুর সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল তাকে।
সংশোধনাগারে আব্দুল হোসেন ওরফে আবালের সঙ্গে পরিচয় হয় সাজ্জাকের। অবৈধ অনুপ্রবেশ, ডাকাতি-সহ একাধিক মামলায় অভিযুক্ত আবাল। এরপর সাজ্জাকের ঠিকানা বদলায়। রায়গঞ্জ কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে। তবে সেই আবালই নাকি গত ১৫ জানুয়ারি পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে প্রিজন ভ্যান থেকে পালাতে সাহায্য় করেছিল। ঠিক কীভাবে সাহায্য করেছিল আবাল? ওইদিন ইসলামপুর আদালতে পেশ করা হয় সাজ্জাককে। পুলিশের অনুমান, আদালত চত্বরে সাজ্জাককে আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করে আবাল। এরপর আদালত থেকে রায়গঞ্জ কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় শৌচকর্ম করার দাবি জানায় সাজ্জাক।
প্রিজন ভ্যান থেকে নামার পর আবালের দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্র দিয়েই পুলিশকে গুলি চালায় সাজ্জাক। তারপর বাইকে চড়ে পালিয়ে যায় দুজনেই। শনিবার সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল সাজ্জাক। পুলিশ তাকে রুখতে ঘটনাস্থলে যায়। বাধা দিতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় সাজ্জাক। পালটা আত্মরক্ষায় এনকাউন্টার পুলিশের। সাজ্জাক খতম হওয়ায় স্থানীয়রা যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন। করণদিঘির বাসিন্দাদের দাবি, "সাজ্জাকের আতঙ্কে কাঁটা হয়ে থাকতে হত তাদের। সাজ্জাক খতম হওয়ায় আর ভয়ে ভয়ে বাঁচতে হবে না।"