বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: প্রশাসনের অনুমতি নেই। মাটি ও প্রযুক্তিগত পরীক্ষার বালাই নেই। দার্জিলিংয়ের (Darjeeling) পোখরিয়াবং ব্লকের টুংসুংখোলায় বালাসন নদীর উপর ১৪০ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করে চমক দিলেও প্রশ্নের মুখে ইন্ডিয়ান গোর্খা জনশক্তি ফ্রন্টের আহ্বায়ক অজয় এডওয়ার্ড। কোনও কারণে সেতু ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটলে কে নেবেন তার দায়? সুখিয়াপোখরির বিডিও আরোগ্য গোয়া বলেন, "যিনি অনুমতি ছাড়া সেতু নির্মাণ করেছেন দায় তাঁরই।" ব্লক প্রশাসনের তরফে সেতু তৈরির শুরুতেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও জিটিএ-র তরফে কেউ মুখ খুলছেন না। কারণ, ভোট হারানোর ভয়!
কেন হবে না ভয়? কৌশলে জাতিগত আবেগ কাজে লাগিয়ে ইন্ডিয়ান গোর্খা জনশক্তি ফ্রন্টের আহ্বায়ক সেতুর নামকরণ করেছেন যে 'গোর্খাল্যান্ড'। সেতুর নামকরণ নিয়ে রবিবার উদ্বোধনের পর থেকেই রাজনৈতিকমহলে বিতর্ক চলছে। কিন্তু সবটাই আড়ালে। প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছেন না। ১৪০ ফুটের সেতুটির জন্য রাজ্য সরকার, জিটিএ অথবা ব্লক প্রশাসন অর্থ বরাদ্দ করেনি। স্থানীয় বাসিন্দা, ১৬টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং অজয় এডওয়ার্ডসের আর্থিক সাহায্যে তৈরি হয়েছে। এখানে নদীর উপর সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। সেতুটি টুংসুং চা বাগানের সঙ্গে ধোতরে উপত্যকার যোগাযোগ সহজ করেছে।
অজয় এডওয়ার্ডস নিজে সেতু নির্মাণের জন্য সিমেন্ট ও রড সরবরাহ করেছেন বলে খবর। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রায় এক বছরে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এরপর স্থানীয় মানুষের উপস্থিতিতে রবিবার সেতুর উদ্বোধন করেন অজয় এডওয়ার্ড। কিন্তু সেতু তৈরি করতে যে সমস্ত প্রযুক্তিগত নিয়ম মেনে চলা হয়, এক্ষেত্রে কি সেটা হয়েছে? উত্তর মেলেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসন, পুলিশ ও রাজনৈতিক চাপে ওই সেতু নির্মাণ বিলম্ব হয়েছে। এমনকী নির্মাণ কাজ চলাকালীন সেতুর তত্ত্বাবধায়ক সুরজ তামাংকে কাজ বন্ধ করার জন্য হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল। অজয় এডওয়ার্ড প্রযুক্তিগত নিয়ম মেনে চলার প্রসঙ্গ উড়িয়ে সাফ জানিয়েছেন, যতই বাধা আসুক সবাই মিলে চাইলে কোনও কাজ আটকানো যায় না। এর আগে এই সেতু নির্মাণের জন্য একাধিকবার সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু কেউ শোনেনি।
