শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: দিল্লি বিস্ফোরণের সঙ্গে তিনি জড়িয়ে নেই! অন্য একটি মামলায় মুর্শিদাবাদের মইনুল হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে এসেছিলেন এনআইএ। বাড়িতে তল্লাশি অভিযানের পর এমনটাই দাবি মইনুল ও তাঁর পরিবারের। মইনুল বলেন, "আমি সন্ত্রাসী নই। দিল্লি বিস্ফোরণের বিষয়ে এনআইএ-র গোয়েন্দা বা পুলিশের তরফে আমাকে কোনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।"
সোমবার দিল্লির বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছে ১৩ জনের। বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে। এদিকে বুধবার সকাল থেকে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার অন্তর্গত নিমগ্রামের বাসিন্দা মইনুল হাসানের বাড়িতে তল্লাশি চালায় এনআইএ। রটে যায় দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে তাঁর বাডি়তে তল্লাশি চালাচ্ছে এনআইএ-র আধিকারিকরা। এই ঘটনার বৃহস্পতিবার মইনুল ও তাঁর পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেউ বা কারা দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে দিতে চাইছেন। ওই পরিবারের আরও দাবি, মইনুলকে দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনার বিষয়ে এনআইএ-র তদন্তকারীরা কোনও প্রশ্ন করেননি। এই দাবির স্বপক্ষেও যুক্তি দিয়েছে পরিবার।
আধিকারিকদের দেওয়া 'সার্চ ও সিজার লিস্টের মেমোরান্ডাম' দেখিয়ে ওই পরিবারের দাবি ২০২৩ সালের মে মাসের একটি মামলার তদন্তে মইনুলের বাড়িতে এসেছিলেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, আল কায়দা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনের গ্রেপ্তারির পর গুজরাট এটিএস ২০২৩ সালের মে মাসে এই মামলার শুরু করেছিল। পরে ওই বছর জুন মাসে এনআইএ মামলার তদন্তভার হাতে নেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃদুভাষী মইনুল মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বাড়ির হাল ধরতে ভিনরাজ্যে কাজে যান। দিল্লি, মুম্বই, গুজরাট-সহ একাধিক রাজ্যে বিভিন্ন ঠিকাদারদের অধীনে মূলত পাইপ মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। বিয়ের পর আর বাইরে কাজে যাননি। বর্তমানে সে এলাকাতেই কাজ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী জানান, "এনআইএ-র তল্লাশির পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখলাম দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে মইনুলের কিছু যোগ মেলায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। তাই ওই পরিবারের সঙ্গে আমরাও বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছি।" নবগ্রামের বিধায়ক কানাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, "দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে ওই যুবকের কোনও যোগ নেই বলেই শুনেছি। ওই যুবকের সম্পর্কে খারাপ কোনও তথ্য গ্রামবাসীরা আমাকে জানায়নি।"
মইনুল বলেন, "প্রায় আড়াই বছর আগে আমি মুম্বইতে একজন কন্ট্রাক্টরের অধীনে কাজ করতাম। সেই সময় ওই নির্মাণস্থলে কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিকও কাজ করতেন। এনআইএ-র গোয়েন্দারা তেমনই এক বাংলাদেশি নাগরিক সম্পর্কে তথ্য জানতে আমার কাছে এসেছিলেন। দিল্লি বিস্ফোরণের বিষয়ে এনআইএ-র গোয়েন্দা বা পুলিশের তরফে আমাকে কোনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। আমি সন্ত্রাসী নই।" তাঁর আরও দাবি, তল্লাশির পর তাঁকে 'ক্লিনচিট' দিয়েছেন তদন্তকারীরা।
