সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমারেখা লঙ্ঘনের দায়ে দু’দেশে আটক থাকা মোট ৭৯ জন ভারতীয় ও বাংলাদেশি মৎস্যজীবীর জেলমুক্তি হল সোমবার। এদের মধ্যে ৪৭ জন ভারতীয় ও ৩২ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবী। বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী দু’দেশের হাইকমিশনের আলোচনার ভিত্তিতে সোমবার রাত ও মঙ্গলবার ভোরে ওই মৎস্যজীবীদের দু’দেশের উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে প্রত্যর্পণ করা হয়।
সমুদ্রে আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রম করে বাংলাদেশ জলসীমায় ঢুকে পড়ায় প্রায় ৫ মাস পর বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্তি মিলল তিনটি ট্রলার-সহ ৪৭ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীর। তাঁরা সকলেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের বাসিন্দা। অন্যদিকে, বাংলাদেশের দুটি ট্রলার-সহ ৩২ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীরও মুক্তি মিলেছে। তারা তিনমাস আটক ছিলেন। গত ১৩ জুলাই কাকদ্বীপের দুটি ট্রলার ‘এফবি মা মঙ্গলচণ্ডী-৩৮’ ও ‘এফবি ঝড়’ এবং গত ২ আগস্ট কাকদ্বীপেরই আরও একটি ট্রলার ‘এফবি পারমিতা’-কে বঙ্গোপসাগরে আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ায় আটক করেছিল বাংলাদেশ নৌবাহিনী। ট্রলার তিনটিতে থাকা মোট ৪৮ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীর বিচার চলছিল বাংলাদেশের আদালতে। তাঁদের মধ্যে মঙ্গলচণ্ডী ট্রলারে থাকা ৩২ বছরের এক মৎস্যজীবী বাবুল দাস ওরফে বোবা-র বাংলাদেশে বিচারাধীন থাকাকালীন মৃত্যু হয়। ওই মৎস্যজীবীর কফিনবন্দি দেহ আগেই দেশে ফিরেছে। এবার মুক্তি মিলল বাকি ৪৭ জনের।
একইভাবে ভারতের এলাকায় ঢুকে মাছ ধরার দায়ে আটক করা হয়েছিল বাংলাদেশি ট্রলার ‘বাবার আশীর্বাদ’ ও ‘মায়ের দোয়া’- কে। তাতে থাকা ৩২ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীরও এদিন মুক্তি মিলেছে। সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র জানান, দুই দেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমারেখায় (আইএমবিএল) ওই ৭৯ জন মৎস্যজীবীকে প্রত্যর্পণ করবে। দু’দেশের এই বন্দি প্রত্যর্পণ দ্রুত সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের তৎপরতায়। তাছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারও মৎস্যজীবীদের দ্রুত মুক্তির বিষয়ে উদ্যোগ নেয়। গোটা প্রক্রিয়ায় সমস্ত পক্ষের সঙ্গে সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক সংগঠন যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল বলে তিনি জানান। মৎস্যজীবীদের মুক্তি মেলায় খুশি তিনি। নতুন বছর শুরুর আগেই ৪৭ জন মৎস্যজীবীর মুক্তি মেলায় কাকদ্বীপে মৎস্যজীবী মহল্লাতেও এখন খুশির রেশ।
