shono
Advertisement

অনুব্রতর গ্রেপ্তারির পর থেকেই থমথমে বীরভূম, বন্ধ জেলা তৃণমূল নেতাদের ফোন, অনেকে নিরুত্তর

বীরভূমে নতুন আতঙ্ক, এবার সিবিআইয়ের নজরে কে?
Posted: 10:09 AM Aug 12, 2022Updated: 10:10 AM Aug 12, 2022

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ‘আপনি যে নম্বরটি ফোন করছেন, সেই নম্বরটি এখন উপলব্ধ নেই। পরে আবার চেষ্টা করুন।’ অনেকের ফোন বেজেই গেল। ফোন ধরলেনই না। কারও বা ফোন বন্ধ। কেষ্টর গ্রেপ্তারের পর বীরভূমে ম্রিয়মান ঘাসফুল শিবির। তবে সন্ধেয় কিছুটা আড়মোড়া ভাঙলেন। বিজেপির (BJP) দিকে কেউ কেউ আঙুল তুললেন। বিজেপির চক্রান্তের জেরেই দলের প্রিয় জেলা সভাপতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা নিয়ে সরব হলেন অনেকে। এদিকে কেষ্টর গ্রেপ্তারের পর নতুন আতঙ্ক, এরপর কে?

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে ব্লক ও পুর এলাকায় যুবকল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে রাখীবন্ধন উৎসব পালিত হচ্ছিল। কোথাও তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, কর্মীরা উদ্যোগ নিয়ে পালন করছিলেন। বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) গ্রেপ্তারের খবর আসে। ঝুপ করে সব যেন পালটে যায়। সিউড়ি পুরসভার সামনে চলা উৎসব থেমে যায়। কাছেই জেলা তৃণমূল ভবনে ফিরে যান বিধায়ক তথা জেলা পরিষদেক সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। শহর সভাপতি মহম্মদ সফি, জেলা নেতা রাধাবল্লভ চট্টোপাধ্যায় পার্টি অফিসে এসে হাজির হন। কিছুক্ষণ পরে বিকাশবাবু সিউড়ি থেকে বোলপুর বাড়িতে ফিরে যান। বিকালে জানান, “উত্তরপাড়ার দিদি মারা গিয়েছে। দিদির কাছে মানুষ হয়েছিলাম। সঙ্গে কেষ্টদার গ্রেপ্তার। মন খুব খারাপ। বাড়ি থেকে আর বের হইনি।” রামপুরহাটের ব্লকের উৎসবে সকাল থেকে হাজির ছিলেন দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা উপাধ্যক্ষ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন পুরপ্রধান সৌমেন ভকত। সেখান থেকে রামপুরহাট পাঁচমাথার মোড়ে আসার কথা ছিল। দু’জনেই ব্লক অফিস থেকে ফিরে যান। সারাদিন বারেবারে ফোন করেও আশিসবাবুকে পাওয়া যায় নি। মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “এই চরম সময়ে আমি জেলার বাইরে সরকারি কর্মসূচিতে মেদিনীপুরে। বোলপুরে সকলে ভাবছে, আমি জেলায় ফিরে ওদের সঙ্গ দেব।” লাভপুরের বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিত সিংহ বলেন, “দলের এখন সংকট মূহূর্ত চলছে। লাভপুরে কর্মীদের নিয়ে বসেছি। কি করা যায় তার আলোচনা চলছে।”

[আরও পড়ুন: ব্যবসায়ী-বিএসএফ-রাজনৈতিক নেতাদের ‘মধুচক্র’, গরু পাচার মামলার ইতিহাস জানেন?]

এদিকে অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তারের পর জেলা পার্টি অফিসে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন জেলার কয়েকজন নেতা। তাঁরা আগামী কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেন। সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত হয়, বিজেপির এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে পালটা প্রচারে যেতে হবে। দলের জেলা সহ সভাপতি তথা মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আইনের লড়াই আইন দিয়ে হবে।”

উল্লেখ্য, অনুব্রতর গ্রেপ্তারের পরেপরেই মলয়বাবু-সহ দুবরাজপুরের দুই আইনজীবী আসানসোলের দিকে রওনা হয়ে যান। জেলা পরিষদের কো মেন্টর ধীরেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যিনি লোকের বিপদের দিনে সবার আগে বুক চিতিয়ে দাঁড়াতেন। আজ তাঁরই বিপদ।” ময়ূরেশ্বরের বিধায়ক অভিজিৎ রায় বলেন, “ইচ্ছে ছিল না। তবু দলের কর্মসূচি তাই রাখী বন্ধন করতে হল। মন ভাল নেই। কর্মীদের বলেছি, মাথা ঠান্ডা রাখুন। ভেবে কাজ করুন।” জেলা সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি কাজী ফজরুদ্দিন ও আইএনটিটিইউর জেলা সভাপতি ত্রিদিভ ভট্টাচার্য জানান, আজ শুক্রবার তাঁরা কর্মীদের নিয়ে প্রতিবাদে পথে নামবেন। অনুব্রত মণ্ডল আর সিউড়ি ২ সভাপতি নুরুল ইসলাম একসঙ্গে রাজনীতি শুরু করেছিলেন। এই ব্লকে নেতার গ্রেপ্তারের পরেও এদিন মহিলা সম্মেলন হয়েছে। নুরুল জানান, “আমি ও কেষ্টদা পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ। বামফ্রন্ট আমলে এমন কত মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়েছি। কেষ্টদাকে গ্রেপ্তার করে বিজেপি তাদের কর্মীদের উজ্জীবিত করতে চাইছে। কিন্তু গ্রামে গ্রামে তাদের সংগঠনের কোনও লোক নেই।’’

[আরও পড়ুন: সায়গলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ, CBI হেফাজতে প্রথম রাতে কী করলেন কেষ্ট?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার