সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: "সোনালিদের ছাড়িয়ে এনেছি। বাকি চারজনকেও ছাড়িয়ে আনব।" কোচবিহারের রাসমেলার মাঠের জনসভা থেকে কেন্দ্রকে বিঁধে বড় বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বাংলায় কোনও এনআরসি, ডিটেনশন ক্যাম্প করতে দেওয়া হবে না। আরও একবার সেই বার্তাই জোরালভাবে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
কোচবিহার সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল, সোমবার প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন। আজ, মঙ্গলবার রাসমেলার মাঠে জনসভা করেন তিনি। সেখানেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করে একের পর এক বার্তা দিয়েছেন। ভিনরাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের 'বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী' দাগিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই বিষয়ে ফের আক্রমণ করেছেন মমতা। বীরভূমের বাসিন্দা সোনালি বিবিদের(Sonali Bibi) বাংলাদেশি অভিযোগে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ছয়মাস বাংলাদেশে বন্দি ছিলেন তাঁরা। দিন কয়েক আগে সোনালি বিবি তাঁর নাবালক ছেলেকে নিয়ে মালদহের মহদীপুর সীমান্ত দিয়ে রাজ্যে ফিরেছেন। সোনালির স্বামী ও আরও তিনজন বাংলাদেশে রয়েছেন। সেই ইস্যুতে এবার কেন্দ্রকে জোরাল আক্রমণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সোনালিদের ছাড়িয়ে এনেছি। বাকি চারজনকেও ছাড়িয়ে আনব।" রাসমেলার মঞ্চ থেকে মমতা সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, দিল্লির পুলিশ সোনালিদের বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশ পাঠিয়ে দিয়েছিল। সেখানে তাঁদের অনেক কষ্টের মধ্যে থাকতে হয়েছে। খেতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। বাংলা থেকে খাবারের জন্য টাকা পাঠানো হত। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কিছুই করা হয়নি বলে অভিযোগ। রাজ্য সরকার সোনালি বিবি ও তাঁর ছেলেকে ফিরিয়ে এনেছে। জোরালভাবে সেই কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশে থাকা বাকি চারজনকেও রাজ্য সরকার ফিরিয়ে আনবে। সেই বার্তা এদিন দিয়েছেন তিনি।
জেল থেকে ছাড়া পেলেও বাংলাদেশেই রয়েছেন সোনালি বিবির স্বামী ও আরেক পরিবার। কবে তাঁরা দেশে ফিরবেন? সেই বিষয়ে স্পষ্ট কোনও বার্তা কেন্দ্রের তরফে দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে বীরভূমের পাইকর গ্রামের বাড়ি ফিরেও স্বামীর জন্য দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। স্বামী দ্রুত ফিরে আসুক, তেমনই চাইছেন সোনালি। বাংলায় ফিরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সোনালি। বাংলাতেই তাঁরা থাকতে চান, ভিনরাজ্যে আর যাবেন না। সেই ইচ্ছাও সোনালি বিবি প্রকাশ করেছেন।
রাজ্যে এনআরসি, ডিটেনশন ক্যাম্প করতে দেওয়া হবে না। পঞ্চানন বর্মার পায়ে হাত দিয়ে সেই বার্তাও মুখ্যমন্ত্রী ফের দিয়েছেন। মমতার কথায়, "এনআরসি মানি না, মানব না। ডিটেনশন ক্যাম্প হবে না।" বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি হতে দেওয়া যাবে না। সেই বার্তাও তিনি দিয়েছেন।
