সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রের নয়া শ্রম কোড রাজ্যে লাগু হবে না, তা আগেই জানিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকার। এবার রাজ্যের হাতে এসে পৌঁছেছে শ্রম সংক্রান্ত সেই আইনের প্রতিলিপি। সেখানে ১০০ দিনের কাজে টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে নয়া 'শর্ত' দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেসব শর্ত 'অসম্মানজনক' বলে আখ্যা দিয়ে কোচবিহারের জনসভা থেকে এই সংক্রান্ত কাগজ ছিঁড়ে ফেললেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার দু'দিনের জন্য কোচবিহার সফরে গিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। সেখানে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই কেন্দ্রের সরকারকে একের পর এক ইস্যু তুলে আক্রমণ শানিয়েছেন। তবে প্রতিবাদের সুর সবচেয়ে চড়ালেন কেন্দ্রের নয়া শ্রম আইনের বিরুদ্ধে। মমতার কথায়, ''তিন, চারদিন আগে আমাদের একটা নোটিস পাঠিয়েছে। কেন্দ্রের নতুন লেবার কোড নিয়ে। ১০০ দিনের কাজের টাকা দিতে নতুন শর্ত চাপিয়েছে। আমরা এসব শর্ত মানি না, মানব না। এটা অসম্মানের। এই আমি কাগজ ছিঁড়ে ফেলে দিলাম। এটা কেন্দ্রের কোনও নোটিস নয়, এটা আমার কাছে থাকা কাগজ।''
কাগজ হাতে নতুন শ্রম বিধির প্রতিবাদে তৃণমূল নেত্রী। মঙ্গলবার, কোচবিহারে। নিজস্ব ছবি।
আলাদা আলাদা রাজ্যে একই পদে আলাদা বেতন কাঠামো, একই সংস্থায় কাজ করেও রাজ্যভিত্তিতে শ্রমের পরিমাণ এবং পারিশ্রমিক আলাদা। শ্রমিকদের নিরাপত্তায় পৃথক বিধি। এসব জটিলতা কাটাতে চলতি বছরের নতুন শ্রম আইনের প্রস্তাব পাশ করেছিল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ৪৪টি আলাদা আলাদা শ্রম আইনকে সংগঠিত করে নয়া চারটি শ্রম কোড চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল নতুন শ্রম আইনে। নভেম্বর থেকে সেই শ্রম আইন কার্যকর হয়ে যায়। তবে নতুন কোড লাগু হবে কি না, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে। সেক্ষেত্রে এ রাজ্যের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, নয়া কোড মানা হবে না। যদিও কোনও কোনও বেসরকারি সংস্থায় নয়া বিধি চালু হয়েছে।
এবার কোচবিহারের প্রকাশ্য সভায় সেই শ্রম বিধির প্রতীকী কাগজ ছিঁড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানালেন, ''১০০ দিনের কাজের টাকা পাওয়ার জন্য নতুন করে যেসব শর্ত চাপানো হয়েছে, তা অসম্মানজনক। এটা মানছি না, মানব না। এই কাগজ ছিঁড়ে ফেললাম। এটা কেন্দ্রের পাঠানো কোনও নোটিস নয়, এটা আমার কাগজ।'' তার আগেই অবশ্য মমতা বলেন, ''১০০ দিনের কাজে এখনও ৫১,৬১৭ কোটি টাকা পাইনি। তোমাদের দয়ার দরকার নেই, আমরা বিকল্প কাজ করতে জানি। আমরা আবার ক্ষমতায় আসব, নিজেরাই কর্মশ্রী প্রকল্পের আওতায় ১০০ দিনের কাজের ব্যবস্থা করব।''
