shono
Advertisement
Killing

'ব্যাভিচারী স্ত্রী'কে গলা কেটে খুন! দেহ বস্তাবন্দি করেও হল না শেষরক্ষা, ময়নায় গ্রেপ্তার রাজমিস্ত্রি

সপ্তাহখানেক আগে চণ্ডিয়া নদী থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার হয় দেহ। যদিও কাটা মুন্ডু এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 09:37 PM Jan 24, 2025Updated: 09:42 PM Jan 24, 2025

সৈকত মাইতি, তমলুক: ব্যভিচারী স্ত্রী! আক্রোশ মেটাতে গলা কেটে খুনের দেহ বস্তাবন্দি করেও শেষরক্ষা হল না। পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় গ্রেপ্তার স্বামী।  সপ্তাহখানেক পর বস্তাবন্দি মুন্ডুহীন মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনার কিনারা হতেই তীব্র শোরগোল ময়না জুড়ে। শুক্রবার ধৃতকে তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।  যদিও এখনও পর্যন্ত মহিলার কাটা মুন্ডুটি উদ্ধার হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ওই মৃত মহিলার নাম শেফালি বর্মন। স্বামী পবিত্র বর্মন। ময়না থানার চন্ডিয়া নদী সংলগ্ন আড়ং কিয়ারানা এলাকার বাসিন্দা। পেশায় রাজমিস্ত্রি পবিত্র বর্মনের সঙ্গে প্রায় বছর ১৫ আগে দেখাশোনা করে বিয়ে হয় পাশের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবংয়ের মিঠাপুকুর এলাকার বাসিন্দা শেফালির। তাঁদের কোনও সন্তান ছিল না। নিঃসন্তান এই দম্পতি কর্মসূত্রে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দামানে ছিলেন। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজে স্ত্রী শেফালিকে সঙ্গে নিয়েই গিয়েছিলেন পবিত্র।

এরপরই দম্পতির জীবনে বদল আসে। আন্দামানের ভাড়া বাড়িতে থাকা অপর এক পরিযায়ী শ্রমিক পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুরের গুড়গ্রাম এলাকার এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় গৃহবধূ শেফালির। আর সেই পরিচয় ক্রমে প্রেমের সম্পর্কে রূপ নেয়। এমন অবস্থায় গত বছর দুর্গাপূজার আগেই আন্দামান থেকে ময়নার গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন ওই বর্মন দম্পতি। একইসঙ্গে দেশের বাড়িতে ফেরেন প্রেমিক ভগবানপুরের ওই যুবকও। ফলে বাড়ি ফিরে এসেই দিন তিনেক থাকতে না থাকতেই প্রেমের টানে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে ভগবানপুরে প্রেমিকের বাড়িতে আশ্রয় নেয় গৃহবধূ শেফালি। তাতেই এই দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। স্ত্রীকে ফিরে পেতে মরিয়া পবিত্র গ্রামের লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে ভগবানপুরে সালিশি সভা বাসায়। কিন্তু কোনওভাবেই প্রেমিক যুবককে ছেড়ে স্বামীর বাড়িতে ফিরতে রাজি ছিলেন না শেফালি। ফলে দুপক্ষের সম্মতিতে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে চলতি মাসের ১২ তারিখ থেকে আচমকা নিখোঁজ হয়ে যায় ময়নার ওই গৃহবধূ। একইসঙ্গে চণ্ডিয়া নদী থেকে উদ্ধার হয় অজ্ঞাত পরিচয় এক মহিলার বস্তাবন্দি মুন্ডু কাটা লাশ! রবিবার সকালে ময়নার রায়চক বর্মন খেয়াঘাট সংলগ্ন এই এলাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনার তদন্তে নেমে বস্তাবন্দি ওই মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের পাশাপাশি ড্রোন উড়িয়ে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ কুকুর নিয়ে এসে এলাকা জুড়ে তল্লাশি অভিযানের নামে পুলিশ। যদিও এখন পর্যন্ত কাটা মুন্ডু উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। তবে সন্দেহের তালিকায় শীর্ষে থাকা প্রাক্তন স্বামী পবিত্র বর্মনের গতিবিধির উপর দিন কয়েক ধরেই নজরে রেখেছিল পুলিশ। অবশেষে এই খুনের ঘটনা নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে পবিত্রকে আটক করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে ময়না থানার পুলিশ। অবশেষে পুলিশে জেরায় ভেঙে পড়ে নিজের কৃতকর্মের দোষ স্বীকার করে। শুক্রবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বাকচা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আড়ং কিয়ারানা বুথের পঞ্চায়েত সদস্য খোকন মণ্ডল বলেন, ''প্রায় মাছ তিনেক আগে প্রথম পক্ষের স্বামীকে ছেড়ে প্রেমের টানে ভগবানপুরের এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল ওই গৃহবধূ। ফলে স্ত্রীকে ফিরে পেতে অনেকটাই চেষ্টা করেছিল স্বামী পবিত্র। কিন্তু এভাবে যে এমনটা ঘটতে পারে তা আমরা কখনও ভাবতে পারিনি।'' যদিও এ বিষয়ে তমলুকের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আবজাল আবরার জানিয়েছেন, ''ময়নায় নদী থেকে উদ্ধার হওয়া মুণ্ডহীন মহিলার পরিচয় জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় প্রাক্তন স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।''

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে অশান্তির জের।
  • খুন করে দেহ বস্তাবন্দি করে লোপাটের অভিযোগ গ্রেপ্তার স্বামী।
  • সপ্তাহখানেক আগে চণ্ডিয়া নদী থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার হয় দেহ।
Advertisement