shono
Advertisement

‌লকডাউন কেড়েছে রোজগার, আর্থিক অনটনে গলার নলি কেটে আত্মহত্যা ভ্যানচালকের

ডায়মন্ড হারবারের ঘটনায় পরিবারের দাবি, মানসিক চাপেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত।
Posted: 08:59 PM Nov 19, 2020Updated: 08:59 PM Nov 19, 2020

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: করোনা সংক্রমণ (Corona Pandemic) রুখতে চলতি বছরের মার্চে দেশজুড়ে জারি হয়েছিল লকডাউন (Lockdown)। আর এই লকডাউনই ফের কেড়ে নিল আরও একটি প্রাণ। লকডাউন থেকেই বন্ধ ছিল রোজগার। সংসার চালাতে না পেরে তাই বঁটি দিয়ে গলার নলি কেটে আত্মহত্যা করলেন দীনেন্দ্র হালদার নামে এক ভ্যানচালক। বৃহস্পতিবার সকালের এই ঘটনাকে ঘিরেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কুলপি থানার সীতারামপুর গ্রামে।

Advertisement

এদিন সকালে ঘুম ভেঙে উঠে বাড়ির বাথরুমে গলার নলি কাটা অবস্থায় বাবার রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ছেলেরা। রক্তাক্ত দেহের পাশে একটি বঁটিও পড়ে থাকতে দেখে তারা। তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। এরপরই পুলিশ এসে খবর দেওয়া হলে, আধিকারিকরা এসে দীনেন্দ্রর মৃতদেহটি উদ্ধার করেন।

[আরও পড়ুন:‌ ভয়াবহ বিস্ফোরণ মালদহের প্লাস্টিক কারখানায়, ঘটনাস্থলেই মৃত ৫‌]

স্থানীয় ও পুলিশসূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রী ও তিন ছেলেকে নিয়ে কুলপির সীতারামপুর গ্রামে থাকতেন বছর ৪৬–এর দীনেন্দ্র। ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন তিনি। কিন্তু লকডাউন চলাকালীন বন্ধ হয়ে যায় রোজগার। আনলক পর্বে ভ্যান চালানো শুরু হলেও ভাল রোজগার হচ্ছিল না। ফলে প্রচণ্ড আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়ে বাজারে বেশ কিছু টাকা ধারও করে ফেলেন তিনি। বাড়তি কিছু রোজগারের আশায় বড় ছেলে বছর পনেরোর সাগরকে পড়াশোনা ছাড়িয়ে কাজে নামিয়েছিলেন। এসবের কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তার জেরেই ওই ব্যক্তি ঘরে ব্যবহার করা বঁটি দিয়ে গলার নলি কেটে আত্মহত্যা করেছেন, এমনটাই মনে করছেন প্রতিবেশী থেকে পুলিশ – সকলে।

[আরও পড়ুন:‌ ‌সম্পত্তির জন্য নিত্য মারধর করে ছেলে-বউমা! আদালতের দ্বারস্থ বৃদ্ধা]

এই প্রসঙ্গে মন্দিরবাজারের DSP দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‌এর আগেও একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন ওই ব্যক্তি। সে যাত্রা রক্ষা পেয়েছিলেন তিনি। এদিনের ঘটনাটিকেও প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে। রক্তাক্ত বঁটিটিও উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে, মৃতের বড় ছেলে সাগর হালদার জানায়, ‘এদিন সকালে ঘুম ভেঙে বিছানায় বাবাকে দেখতে না পেয়ে ঘরের বাইরে বেরতেই দরজার সামনে রক্ত পড়ে থাকতে দেখে চমকে উঠি। পাশের বাড়ি কাকাকে ডেকে এনে বাড়ির চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। একটু পরেই বাথরুমের মধ্যে গলার নলি কাটা অবস্থায় বাবার রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে ভয়ে চিৎকার করতে শুরু করি।’ পাড়ায় অত্যন্ত ভাল মনের মানুষ বলে পরিচিত দীনেন্দ্র হালদারের এমন মৃত্যুতে এলাকায় দেখা দিয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য। ঘটনার আকস্মিকতায় চমকে উঠেছেন প্রতিবেশীরাও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement