সুমন করাতি, হুগলি: অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকার বাড়িতে দুষ্কৃতী হানা। বৃদ্ধার গলা টিপে ধরে লুট করা হয় গয়না! টুঁ শব্দটিও যাতে তিনি করতে না পারেন, সেজন্য দুষ্কৃতীরা তাঁর মুখ সেলোটেপ দিয়ে আটকে দেয় বলে অভিযোগ। প্রাণে না মারার অনুরোধ করেছিলেন বৃদ্ধা। গয়না লুট করেই ওই বাড়ি থেকে পালায় দুই দুষ্কৃতী। হাড়হিম করা ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির মানকুণ্ডুর আশ্রমপাড়ায়। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। চন্দননগর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রিষড়ার বিদ্যাপীঠ গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন বনানী ভট্টাচার্য। স্বামীর মৃত্যুর পর ৭৫ বছর বয়সী ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা বাড়িতে একাই থাকেন। পরিচারিকা সুলেখা গাইন সেই বাড়িতে থাকলেও গতকাল, সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনার সময় তিনি এলাকারই অন্য একটি বাড়িতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সন্ধ্যা নাগাদ দুই দুষ্কৃতী ওই বাড়িতে হানা দেয়। কিছু বোঝার আগেই বৃদ্ধার গলা টিপে ধরে তারা! বৃদ্ধার মুখ চেপে ধরা হয় বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীদের মুখ ঢাকা ছিল বলে খবর।
কোনওরকমে তিনি দুষ্কৃতীদের প্রাণে না মারার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। বলেন, "সব নিয়ে নাও প্রাণে মেরো না।" এরপরেই দুষ্কৃতীরা বৃদ্ধার হাতের চুরি, গলার হার ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয়। বৃদ্ধার মুখ সেলোটেপ দিয়ে বাঁধা অবস্থাতেই ছিল। পরিচারিকা সুলেখা বাড়ি ফিরে ওই ঘটনা দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পাশের বাড়িতেই ভাড়া থাকেন শিক্ষিকার বোন জলি চট্টোপাধ্যায়। তিনি অন্যদিন দিদিকে দেখতে এলেও গতকাল আসেননি বলে খবর। ঘটনার খবর পেয়ে তিনিও ওই বাড়িতে যান। ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে প্রতিবেশীরাই চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বাড়ি ফিরেও আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না ওই বৃদ্ধার। এদিন তিনি বলেন, "আমাকে প্রাণে মেরেই ফেলত। গলা টিপে ধরেছিল। ওদের মুখ ঢাকা ছিল। আমি ওদের চিনতেও পারিনি। বললাম, তোমাদের চিনি না পুলিশ এলে বলব কী। তাই আমাকে ছেড়ে দিল।" চন্দননগর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
