চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: সন্তানের মা তিনি। তবে স্ত্রীর ন্যায্য অধিকার মেলেনি। আর সেই দাবিতে পাঁচ বছরের সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির দরজায় ধরনায় বসলেন এক গৃহবধূ। বুধবার সকাল থেকেই ধরনায় বসেছেন মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বড়ঞার শ্রীহট্ট গ্ৰামের বধূ। তবে বধূর শ্বশুরবাড়ির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে যদিও পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বড়ঞা থানার পুলিশ।
গত ২০১৫ সালে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার শ্রীহট্ট গ্ৰামের বাসিন্দা যুবক ইব্রাহিম শেখের সঙ্গে খড়গ্রামে মায়া খাতুনের বিয়ে হয়। দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। একটি সন্তানও রয়েছে দম্পতির। বছরদুয়েক ধরে ইব্রাহিম ও মায়ার সম্পর্কের অবনতি হয়। নানা বিষয়ে মতবিরোধ তৈরি হয় দু’জনের। সম্পর্কের শীতলতা মানতে পারেননি মায়া। ঝগড়াঝাটি হত তাঁদের। অভিযোগ, জোর করে বাপের বাড়িতেও রেখে আসা হয় তাঁকে। সন্তানকে নিয়ে সেখানেই ছিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: উদয়পুরের দরজির মুণ্ডচ্ছেদের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেই নেটিজেনদের রোষানলে ইরফান পাঠান]
তবে মঙ্গলবার মায়া জানতে পারেন, আইনত বিবাহ বিচ্ছেদ না হলেও তাঁর স্বামী অন্যত্র বিয়ে করেছেন। এই খবর পাওয়ার পর আর বাপের বাড়িতে থাকতে পারেননি তিনি। বুধবার শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন। পাঁচ বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির সামনে ধরনায় বসেন বধূ। তাঁর অভিযোগ, “দাম্পত্য অশান্তির জেরে দু’বছর ধরে আমার স্বামী বাপের বাড়িতে রেখে দিয়ে যায়। আমি আশায় ছিলাম পারিবারিক সমস্যা মিটে যাবে। আবার শ্বশুরবাড়িতে যাব। কিন্তু খবর পাই আমাকে লুকিয়ে স্বামী অন্যত্র বিয়ে করেছে। আমাকে আর চায় না স্বামী। আমি ন্যায্য বিচার চাই। স্বামীর ভাত খেতে চাই। শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চাই। আমার স্বামী ওর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অন্যায় ভাবে আমাকে নিজের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চাইছে। পুলিশকে সব কিছু জানিয়েছি। প্রশাসন যা করবে তা মেনে নেব।”
তবে গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইব্রাহিম শেখের পরিবারের লোকজন বধূর সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছে। তাঁদের মতে, “ওই বধূর চরিত্র মোটেও ভাল নয়। তাই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়। ওকে আমরা সসম্মানে বাবার কাছে রেখে দিয়ে এসেছি।” আপাতত পুলিশ কী করে, সেদিকেই তাকিয়ে বধূ এবং তাঁর সন্তান।