ধীমান রায়, কাটোয়া: গাছের উপর লাফালাফি করতে করতে আচমকা হৃদস্পন্দন বন্ধ। মুখে গ্যাঁজলা, রক্ত উঠে লুটিয়ে পড়ে একের পর এক নটি হনুমানের মৃত্যু হল! ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার শাঁখাই গ্রামে। কীভাবে নিমেষে এতগুলি হনুমান প্রাণ হারাল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গ্রামবাসীদের অনুমান, চাষের জমিতে বিষ দেওয়া হয়েছিল, সেই ফসল খেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে শাখামৃগের দল। তাঁরা চাইছেন, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক।
শনিবার বিকেলে প্রথম দৃশ্যটা চোখে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। জানা গিয়েছে, শাঁখাই গ্রামের রায়পাড়ার কাছে অজয় নদের ধারে একটি মাঠে এদিন বিকেলে ক্রিকেট খেলা করছিল কিছু কিশোর ও যুবক। কিছুটা তফাতে তিনটি হনুমানকে পড়ে কাতরাতে দেখেন তাঁরা। মুখে জল দিয়ে শুশ্রূষার চেষ্টাও করেন। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই মারা যায় তিনটি হনুমান। স্থানীয় বাসিন্দা ছোটন রায়, সাগর মাঝিরা বলেন, "গাছের উপর কয়েকটা হনুমান দেখেছিলাম। হঠাৎ দেখি একটা গাছের উপর থেকে ঝুপ করে পড়ে গেল। কাছে গিয়ে দেখলাম, ওদের মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বের হচ্ছে। তার পর আশপাশেও ওইরকম আরও দুটো হনুমান অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকতে দেখি। কিছুক্ষণের মধ্যেই সবকটাই মারা গেল।"
বিকেল থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত একে একে মোট ৯ টি হনুমানের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তাতে আরও চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। কাটোয়া মহকুমা বন আধিকারিক শিবপ্রসাদ সিনহা বলেন, "ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বনকর্মীদের পাঠানো হয়েছে। দেহগুলি ময়নাতদন্তের পরেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।" কীভাবে মৃত্যু হল এই হনুমানগুলির? স্থানীয়দের সন্দেহ জমিতে বিষ দেওয়ার কারণে সেই ফসল খেয়ে হনুমানগুলির মৃত্যু হতে পারে। একাংশের সন্দেহ, ফসলের ক্ষতি করার কারণে কেউ খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে রাখার কারণে সেই খাবার খেয়ে হনুমানগুলি মারা যেতে পারে। তবে এতগুলি হনুমানের মৃত্যুতে সংশয় বাড়ছে।