shono
Advertisement

বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি! পূর্ব বর্ধমানের ঘোষ বাড়ি থেকে ঐতিহ্যবাহী দেবীমূর্তি গেল সংগ্রহশালায়

আড়াই মাস আগে পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছিল মূর্তিটি।
Posted: 04:55 PM Jun 11, 2021Updated: 04:55 PM Jun 11, 2021

ধীমান রায়, কাটোয়া: ১৩০০ বছরের প্রাচীন মূর্তি (Idol) এনে যে বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন পূ্র্ব বর্ধমানের ঘোষ পরিবার তা থেকে মুক্তি মিলল। শুক্রবার কাটোয়া মহকুমা গ্রন্থাগারের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিদল বেড়াগ্রামে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে উদ্ধার করলেন মূর্তিটি। সেটি নিয়ে যাওয়া হয়েছে কাটোয়া মহকুমা গ্রন্থাগারের সংগ্রহশালায়।

Advertisement

গত ২৫ মার্চ মণ্ডলহাট থেকে দাঁইহাট পুরসভা যাওয়ার রাস্তায় একটি পুকুরের পাঁক তোলার সময় প্রায় সাড়ে চার ফুট উচ্চতার এই মূর্তি উদ্ধার হয়। বেড়াগ্রামের বাসিন্দা উদয় ঘোষ, দিলীপ ঘোষরা মূর্তিটি নিজেদের বাড়িতেই রেখে দেন। আর মূর্তিটি বাড়িতে আনার পর থেকেই ঘোষবাড়িতে ঘটে যায় একের পর এক অঘটন। পরিবারের সদস্যরা জানান, “দেবীর মূর্তিটি আনার তিনদিনের মধ্যেই আমাদের বাড়ির চারটে মোষ হঠাৎই অসুস্থ হয়ে মারা যায়। ১০ দিন পার হতে না হতেই আমাদের বাড়ির ছেলে বাসুদেব(৩০) ঘরের চাল ছাওয়ানোর সময় পড়ে যায়। এখনও সে বিছানায় শয্যাশায়ী। তিনদিন আগে আমাদের বাড়িতে বজ্রপাত হয়েছে। বাজের আওয়াজের কারণে বাড়ির একজন শিশু কানে শুনতে পাচ্ছে না।” তাঁদের ধারণা দেবীমূর্তিটি আনার কারণেই এইসব অঘটন ঘটছে। তাই তাঁরা মূর্তি বাড়িতে রাখতে চাইছিলেন না।

বিষয়টি জানার পর শুক্রবার কাটোয়া মহকুমা গ্রন্থাগারের সম্পাদক তুষার পণ্ডিত-সহ কয়েকজন গাড়ি নিয়ে যান ঘোষ বাড়িতে। সেখান থেকে মূর্তিটি উদ্ধার করে গ্রন্থাগারের সংগ্রহশালায় নিয়ে যাওয়া হয়। মূর্তিটি দিয়ে দেওয়ার আগের মুহূর্তে দিলীপ ঘোষ বলেন, “মাতৃমূর্তিটি ছাড়তে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু দেবীর যথাযথ পুজো হচ্ছে না। বাড়িতেও নানা অঘটন ঘটছে। তাই আমরা মূর্তিটি সরকারি হেফাজতে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

[আরও পড়ুন: দীর্ঘদিন পায়ে বাঁধা লোহার শিকল, বনদপ্তরের উদ্যোগে অবশেষে মুক্তির স্বাদ পেল বুনো হাতি]

প্রায় ১৩০০ বছরের প্রাচীন এই দেবীমূর্তিটি শাস্ত্রের ভাষায় ‘অষ্টভুজাপিতা মারিচী’। দেবীর তিনটে মাথা আর আটটি হাত আছে। দেবীর প্রতিটি মুখে আছে তিনটে করে চোখ। দেবীর মধ্য মুখটি শান্ত। দেবীর ডান দিকের মুখ ক্রুদ্ধ ভঙ্গিমায়। আর দেবীর বাঁ দিকের মুখাবয়ব বরাহ আদলের। দেবীর আটটি হাতে থাকে সূঁচ, সুতো, অঙ্কুশ, রজ্জু, তীর, ধনুক, বজ্র এবং অশোক গাছের ডাল। সম্পূর্ণ মূর্তিতে দেবী দাঁড়িয়ে থাকেন একটি রথের উপর আর সেই রথটা টেনে নিয়ে যায় সাতটা বরাহ। দেবীর রথের চাকার তলায় থাকে রাহু। দেবীকে ঘিরে থাকেন আরও চারজন দেবী। পাল যুগে বৌদ্ধধর্মের উত্থানের সময় এই মরিচী মূর্তির উপাসনার চল ছিল বলে জানান ইতিহাসবিদরা।

[আরও পড়ুন: ‘যশে’র পর ভরা কোটালের প্রভাবে ফুঁসছে সমুদ্র, উপকূলীয় অঞ্চলে ফের প্লাবনের আশঙ্কা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement