সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ডিজিটাল ক্রিয়েটারদের ভিডিওতে যেন ফুটে উঠছে সমাজের ছবি। তাই কারও ব্লগে ১ মিলিয়নের বেশি ভিউ। কারও আবার ২৪ মিলিয়ন। শিক্ষা থেকে বিনোদন, ভ্রমণ থেকে লাইফস্টাইল - রকমারি ভিডিওতে করে মাত করছেন এরা। তাই বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ চাইছে, এঁদের ব্যবহার করে নিজেদের কাজ তুলে ধরতে। তবে পুলিশের শুধু উন্নয়নমূলক কাজেরই প্রচার নয়। সাইবার সুরক্ষার পাঠ দিয়ে এই কাজ যাতে তাঁরা সঠিকভাবে করতে পারেন, তার সচেতনতা শিবির হয়ে গেল রবিবার। এই শিবিরের মধ্য দিয়ে সাইবার অপরাধ রুখতেও বদ্ধপরিকর পুলিশ। রবিবার পুরুলিয়া বেলগুমা পুলিশ লাইনে এই প্রথম কনটেন্ট ক্রিয়েটরস মিট একেবারে কর্পোরেট ধাঁচে হয়। এই শিবিরে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ তাদের 'সহায়' অ্যাপের প্রচারও চালায়।
পুলিশ সুপারের সঙ্গে গ্রুপ ছবি সোশাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের। নিজস্ব ছবি।
প্রায় ১৫০ জন সোশাল মিডিয়ার ব্লগারদের সুরক্ষার পাঠ দেওয়া হয়। এদিন সকাল থেকেই বেলগুমা পুলিশ লাইনের মাঠ ভরে যায় ব্লগারদের ভিড়ে। চং-গাই থেকে সুন্দরী পুরুলিয়া, পুরুলিয়া টুরিজম থেকে শুরু করে কমেডি এক্সপ্রেস - সোশাল সাইটে জনপ্রিয় ট্যাটু আর্টিস্ট থেকে সাইক্লিস্ট। সেবামূলক ওয়েব পেজ থেকে শিক্ষা বিষয়ক পেজ চালানো সোশাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা এদিন হাজির ছিলেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের এই ব্লগাররা আজ সোশাল মিডিয়ায় পরিচিত মুখ। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এই টেক স্যাভি তরুণ-তরুণীদের সোশাল মিডিয়া ব্যবহারের সাথে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তার ব্যাখ্যা করেন। পুলিশ সুপার বলেন, "জেলার সামগ্রিক উন্নয়নে এই সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাদের যাতে সার্বিকভাবে কাজে লাগানো যায় সেই লক্ষ্যেই কনটেন্ট ক্রিয়েটরস মিট ছিলো। ট্রাফিক সচেতনতা, বাল্যবিবাহ রোখা, শিক্ষার প্রসার, পর্যটন, খেলা থেকে সাংস্কৃতিক বিষয়গুলি যাতে তুলে ধরা যায় সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।"
[আরও পড়ুন: ‘চিৎকার কেন? গলা নামান’, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ধমক খেলেন কৌস্তভ]
শিবির শেষে সোশাল মিডিয়ার কনটেন্ট ক্রিয়েটারদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজও সারেন পুলিশ সুপার। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে ও তাঁর আপ্যায়নে ভীষণ খুশি হন ব্লগাররা। পুলিশ সুপারকে কাছে পেয়ে আবদার হতে থাকে সেলফির। সুপারকে নিয়ে ব্লগ করার ঢংয়েই সেলফি তোলেন তাঁরা। চং-গাই পেজ চালানো কমেডিয়ান তো পুলিশ লাইনের মাঠেই গানের প্যারডি ধরেন। হাততালিতে জমে ওঠে গান। পুরুলিয়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ব্লগারদের হাতে একটি করে স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ছন্দহীন সুনীলই মাথাব্যথা! আইএসএলের জন্য কতটা প্রস্তুত বেঙ্গালুরু এফসি?]
ডিজিটাল ক্রিয়েটার শহর পুরুলিয়ার লোকোশেড পাড়ার বাসিন্দা শাশ্বত তেওয়ারি বলেন, "পুলিশের সঙ্গে এই ধরনের আলোচনা বোধহয় আগে কোথাও কোনদিনও হয়নি। আমরা ভীষণ উৎসাহী। এই আলোচনা থেকে সাইবার অপরাধ সম্বন্ধেও অনেক কিছু বিষয় জানতে পারলাম। যা আমাদের কাজে সহায়তা করবে। আমরা নিজেরা যে ধরনের ভিডিও বানাই সেই কাজের সঙ্গে পুরুলিয়ার উন্নয়নেও এবার কাজ করব। পুলিশ সুপার আমাদের এই কাজ করার একটা প্লাটফর্ম তৈরি করে দিলেন।"