অর্ণব দাস, বারাকপুর: সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির দাবিতে রাজ্য সরকারের পাশে দাঁড়ালেন আর জি করে নির্যাতিতার মা-বাবা। হাই কোর্টে রাজ্য সরকারের এই সংক্রান্ত দায়ের করা মামলায় পার্টি হয়ে ইতিমধ্যেই ওকালত নামায় স্বাক্ষরও করেছেন তাঁরা। এনিয়ে আগামী সোমবারের শুনানিতেও উপস্থিত থাকবেন নিহতের মা-বাবা। শনিবার সোদপুর নাটাগড়ের বাড়িতে একথা জানানোর পাশাপাশি সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুললেন তাঁরা।
তরুণী চিকিৎসকের বাবা প্রথমেই আদালতের রায়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বললেন, "রায়ের ১৫২ নম্বর পৃষ্ঠা পড়েলেই সিবিআই অবস্থান বোঝা যাবে। ওঁরা শুধুমাত্র কলকাতা পুলিশের পাঁচদিনের তদন্তের উপর ভিত্তি করেই নিজেদের তদন্ত শেষ করেছেন। বাড়তি কিছুই করেনি। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের থেকে এনিয়ে কৈফিয়ত চাওয়া উচিত। সিবিআইয়ের এক তদন্তকারী আধিকারিক তো তদন্তভার পাওয়ার পরের ১৪ তারিখের পর আর আর জি করেই যায়নি, হাসপাতালের গ্রূপ-ডি স্টাফ সহ অন্যান্য কর্মীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেননি। এমনকি আমার স্ত্রীকেও সাক্ষী রাখেনি। গত বছর ৮ অক্টোবরের পর থেকে সিবিআইএর আধিকারিকেরা আর আমাদের সঙ্গে তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেনি।" প্রায় দুমাস দোষী সঞ্জয় রায় সিবিআই হেফাজতে ছিল, তবুও সিবিআই তাকে সঠিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি বলেও এদিন অভিযোগ তোলেন তিনি।
একমাত্র সন্তানহারা মায়ের অভিযোগ, "সিবিআইকে আমরা অনেক তথ্য দিয়েছি। কারা জড়িত থাকতে পারে এমন অনেকের নাম জানিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলেছি। ঘটনার রাতে মেয়ের সঙ্গে যে চারজন ছিল তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলেছি। কিন্তু কিছুই করেনি।" এই প্রসঙ্গেই মৃতার বাবার সংযোজন, "এনিয়ে আদালতের মাধ্যমে আমরা সিবিআইকে চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু উত্তর পাইনি।" নারকীয় ঘটনার পর থেকেই আর জি করের চেস্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের সকলকেই দায়ী করেছিলেন নির্যাতিতার পরিবার। এনিয়েও সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কর্মরত অবস্থায় নিহত চিকিৎসকের বাবার অভিযোগ, চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সকল পড়ুয়ার সাক্ষরেই বাথরুম ভাঙা হয়েছিল। তাই আমরা সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলাম। কিন্তু তাদের মধ্যে শুধুমাত্র চারজনের নাম সাক্ষী হিসেবে ছিল। তারমধ্যে দুজনের সাক্ষী নেওয়া হয়েছে, বাকিদের নেওয়া হয়নি। যারা সাক্ষী দিয়েছিল তাদের সাক্ষ্যতেও গরমিল ছিল। আমৃত্যু সাজা প্রাপ্ত সঞ্জয় রায়কে সামনে রেখে গোটা ঘটনা আড়াল করতেই এই চক্রান্ত বলেই এদিন দাবি করেন তারা।