অর্ণব দাস, বারাকপুর: কর্তব্যরত অবস্থায় হাসপাতালের ভিতরে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের মতো গুরুতর ঘটনা। অথচ সেই ঘটনায় আর জি কর হাসপাতালের তৎকালীন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ এবং থানার কর্তব্যরত ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে ৯০ দিনেও চার্জশিট পেশ করতে পারল না সিবিআই। আর সেই কারণে শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে এই দুই ব্যক্তির জামিন মঞ্জুর করেছে। আর এই ঘটনায় স্পষ্টতই হতাশায় ডুবেছেন অভয়ার মা-বাবা। তাঁদের মনে হচ্ছে, মেয়ের সুবিচারের দাবিতে এত আন্দোলন বুঝি বৃথাই গেল! আর তাই এই খবর শুনে অভয়ার মায়ের সাফ বক্তব্য, ''আমি তো আর সিবিআই নই, হলে আমিই কাজটা করে দিতাম।''
হারিয়েছেন একমাত্র মেয়েকে। আর ফিরে পাওয়া যাবে না। কিন্তু মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘৃণ্য ঘটনার সুবিচার তো চাই। আর তা চেয়েই এত আন্দোলন, পথে নেমে প্রতিবাদে সুর চড়ানো, সহনাগরিকদের পাশে পাওয়া, বিচারের আশায় বুক বাঁধা। কিন্তু শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডল জামিন পাওয়ায় সেসবই যেন বৃথা হয়ে গেল। বিশেষত টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে গত অর্থাৎ ৯ আগস্টের ঘটনাবলি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। প্রমাণ লোপাটেও তাঁর হাত ছিল বলে অভিযোগ। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের তরফে বরখাস্ত করা হলেও সহকর্মীরা জোর গলায় বলেছিলেন, অভিজিৎ মণ্ডল সেদিন নিজের সমস্ত কর্তব্য করেছিলেন। যদিও তা ধোপে টেকেনি। জেলবন্দিই ছিলেন তিনি। অবশেষে শুক্রবার সিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট দায়ের করতে না পারায় জামিন মিলল। আর তাতে হতাশাই স্বাভাবিক।
এই খবর পেয়ে কার্যত স্তম্ভিত অভয়ার পরিবার। সাময়িক বিস্ময় কাটিয়ে দানা বাঁধল একরাশ ক্ষোভ আর হতাশা। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অভয়ার মা বললেন, ''এই ঘটনায় আমি খুবই হতাশ। বলার মতো কোনও কথা নেই আমাদের কাছে। সিবিআই ৯০ দিনের মধ্যে চার্জশিট না দিতে পারায় তাঁদের জামিন হয়ে গেল! আর কী বলার আছে?'' এরপর সিবিআইকে তোপ দেগে তাঁর আরও মন্তব্য, ''আমি তো আর সিবিআই নই, হলে আমিই কাজটা করে দিতাম।''