shono
Advertisement
RG kar case

'খুশি নই, CBI কী করল?', সঞ্জয়ের আমৃত্যু জেলের নির্দেশে তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন অভয়ার প্রতিবেশীদের

আর কী বললেন মৃতার প্রতিবেশীরা?
Published By: Tiyasha SarkarPosted: 07:44 PM Jan 20, 2025Updated: 07:44 PM Jan 20, 2025

অর্ণব দাস, বারাকপুর: পাড়ার শান্ত-মেধাবী মেয়ের উপর যে নারকীয় অত্যাচার করেছে তার ফাঁসির আশাতেই প্রহর গুনছিলেন প্রতিবেশীরা। ভোর থেকেই সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তির নির্দেশের অপেক্ষায় টিভির সামনেই ছিলেন সোদপুর নাটাগড়ের বাসিন্দারা। বিচারক আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তাঁরা। সরব হলেন সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে।

Advertisement

আর জি কর কাণ্ডের পর থেকেই নির্যাতিতার সুবিচারের আশায় ছিলেন প্রতিবেশীরা। পাড়ার মেয়ের সঙ্গে ঘটনা অন্যায়ের প্রতিবাদে উৎসবে শামিল না হয়ে নির্যাতিতার মা-বাবার ধারনা মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন তারা। গত শনিবার বিচারক সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করতেই ফাঁসির সাজার অপেক্ষা করছিলেন তারা। সেই মতো এদিন সকাল থেকে সাজার ঘোষণার দিকেই নজর ছিল নাটাগড়বাসীর। কিন্তু বিচারক আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করতেই স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিমা বসু বলেন, "এই রায়ে আমরা একদমই খুশি না। আমরা চেয়েছিলাম সঞ্জয়ের ফাঁসি হোক। মেয়েটা বিচার পাক। কলকাতা পুলিশের থেকে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে গেলেও তারা বাড়তি কিছুই করতে পারেনি। এখন সেটাই দেখলাম।" রাজ্যবাসীর মতোই নাটাগড়ের বাসিন্দাদের কথায়, "সিবিআই এতদিন ধরে কী করল?"

আর জি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাড়ির একদম কাছেই সুমন সাহার মুদির দোকান। গত বছর আগস্টে মর্মান্তিক ঘটনার আগে প্রায় প্রতিদিনই পাড়ার শান্ত মেয়েকে কাজে যেতে দেখতেন তিনি। এদিন তিনিও হতাশা প্রকাশ করে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। সুমনবাবুর কথায়, "আমরা চেয়েছিলাম সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি হোক। সেটা হয়নি, তাই আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। সিবিআইও যে কী তদন্ত করল বুঝতে পারলাম না। আগে যা ছিল (কলকাতা পুলিশের তদন্ত) ওরাও তাই করল। এটা একদমই আশা করিনি। আর একজনের দ্বারাও এই নৃশংসতা সম্ভব নয়, অনেকেই এরসঙ্গে যুক্ত আছে।" একইমত প্রতিবেশী পরিতোষ রায়ের। তিনি জানান, "আমৃত্যু কারাদণ্ডে আমরা একদমই খুশি না। ওর (সঞ্জয় রায়) ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। আমরা সকলেই বুঝি যে সঞ্জয়ের পক্ষে একা একাজ করা সম্ভব নয়। তাই বাকি অভিযুক্তরা কোথায় গেল! সেটাও তো সিবিআই খুঁজে বার করতে পারল না।"

আর জি করের আগের তিন বছর তরুণী চিকিৎসক মধ্যমগ্রাম পুরসভা পরিচালিত মাতৃসদন হাসপাতালে প্র্য়াকটিস করতেন। ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত সেটাই ছিল তাঁর কর্মস্থল। চিকিৎসায় নিবেদিত প্রাণ তরুণীর সঙ্গে নারকীয় ঘটনার পর প্রাক্তন সহকর্মীরা সকলেই মুহ্যমান হয়ে পড়েছিলেন। গত সাড়ে পাঁচ মাস ধরে দোষীর কঠোর সাজার অপেক্ষার প্রহর গুণছিলেন তাঁরা। এদিনও রায় শোনার জন্যই কাজের ফাঁকে সকলে  সময় বার করেছিলেন। অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের আমৃত্যু কারাদণ্ড শুনে প্রাক্তন সহকর্মীদের বেশিরভাগই আশাহত। কেউ আবার বিচারকের রায়কে আবার স্বাগত জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে নিহত চিকিৎসকের প্রাক্তন সহকর্মী নার্স মঞ্জুরি দত্ত ধর বলেন, "বিচারক সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করুক, এটাই চেয়েছিলাম। তাহলে নারকীয় এই ঘটনার জন্য অনুশোচনায় জর্জরিত হয়ে তিলে তিলে জেলে থেকেই মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাবে সে।" যদিও আশাহত হয়েছেন, মাতৃ সদনের অ্যাকাউন্টেন্ট রুমা সরকার। তিনি জানিয়েছেন, "এই রায়ে খুশি হতে পারিনি। সিবিআই বলেছে, এই ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলাম।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • পাড়ার শান্ত-মেধাবী মেয়ের উপর যে নারকীয় অত্যাচার করেছে তার ফাঁসির আশাতেই প্রহর গুনছিলেন প্রতিবেশীরা।
  • ভোর থেকেই সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তির নির্দেশের অপেক্ষায় টিভির সামনেই ছিলেন সোদপুর নাটাগড়ের বাসিন্দারা।
  • বিচারক আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তাঁরা। সরব হলেন সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে।
Advertisement