shono
Advertisement
Royel Bengal Tiger

হিংস্র নয় জিনাত প্রেমিক! বলছেন বাংলা-ঝাড়খন্ডের প্রত্যক্ষদর্শীরা

গত ১৭ দিনে ঝাড়খন্ড-বাংলায় রয়্যাল দর্শন করেছেন হাফ ডজনের বেশি প্রত্যক্ষদর্শী।
Published By: Amit Kumar DasPosted: 11:22 PM Jan 18, 2025Updated: 11:22 PM Jan 18, 2025

সুমিত বিশ্বাস, বান্দোয়ান (পুরুলিয়া): বাঘ মানেই মানুষখেকো! এমনই জানে সাধারণ মানুষ। কিন্তু ঝাড়খন্ড থেকে বাংলায় আসা জিনাতের প্রেমিক যে অন্যরকম! সেই ৩১ ডিসেম্বর থেকে ১৮ই জানুয়ারি। গত ১৭ দিনে ঝাড়খন্ড-বাংলায় রয়্যাল দর্শন করেছেন হাফ ডজনের বেশি প্রত্যক্ষদর্শী। কিন্তু সকলের একই কথা এই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আর যাই হোক, মানুষখেকো নয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ওই কথা মুখে মুখে ফিরতে থাকায় খানিকটা আতঙ্ক কমছে বনমহলের বান্দোয়ান সদর থেকে ওই এলাকার রাইকা পাহাড়তলির গ্রামগুলিতে।

Advertisement

শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত যে আতঙ্কের ছবিটা ছিল তা যেন অনেকটা কম শনিবার রাতে। তাই শনিবার বাঘ-বন্দি অভিযানের পঞ্চম দিনে ৪৮ ঘন্টার বিশেষ সাঁড়াশি অভিযানে ওই পাহাড়তলির গ্রামগুলো সন্ধ্যাতেই দরজায় খিল দেয়নি। ফলে থমকে যাওয়া জনজীবন যেন কিছুটা হলেও ছন্দে ফিরছে। সৌজন্যে জিনাতের পুরুষ সঙ্গীর নরম আচরণ। আর এই নরম মনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের আচরণ রীতিমতো খাতায়-কলমে নথিভুক্ত করছে কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগ।

এদিনের রাতে এই পাহাড়তলির বহু মানুষজনই বলছেন, বাঘ যদি কোন ক্ষতি না করে তাহলে ওই বন্যপ্রাণকে নিয়ে তাদের কোন চিন্তা নেই। কিন্তু কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগের পুরুলিয়ার বান্দোয়ান এক বনাঞ্চলের রাইকা পাহাড়ের ভাঁড়ারি টিলার জঙ্গল তো ব্যাঘ্র প্রকল্পের আওতায় বা অভয়ারণ্য নয়। তাই ওই এলাকায় বসবাস করা মানুষজনের সুরক্ষার কথা ভেবে বাঘ-বন্দি করতে চাইছে অরণ্য ভবন। রাজ্যের মুখ্য বনপাল (পশ্চিম চক্র) সিঙ্গরম কুলানডাইভেল বলেন, "এটা তো অভয়ারণ্য নয়। তাই এই পাহাড়-জঙ্গল লাগোয়া যে সমস্ত গ্রাম রয়েছে সেই সকল গ্রামের মানুষজনের সুরক্ষার কথা ভেবে আমাদেরকে এভাবে অভিযান করতে হচ্ছে। "

তবে এই অভিযান কতটা সঠিক বা সঠিক নয় তা নিয়ে পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ প্রেমীদের জল্পনা চললেও এই নিয়ে কোন কথা নেই বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়তলির। বাংলায় আসার পর এই রয়্যাল বেঙ্গলের দ্বিতীয় প্রত্যক্ষদর্শী বান্দোয়ানের জানিঝোর গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী যুধিষ্ঠির মাহাতো বলেন, " আমার মোটরবাইকের হেডলাইটের কাছে বাঘ চলে এলেও আমার কোন ক্ষতি করেনি। ডানদিকে গিয়ে একটু দাঁড়িয়ে যায় ওই বাঘ। আমি তাকে অতিক্রম করে পার হয়েছিলাম। কিন্তু ওই বন্যপ্রাণের মধ্যে আক্রমণের কোনও লক্ষণ আমি দেখিনি। "

রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের এমন নরম আচরণের বিষয়টি ঝাড়খান্ড বনবিভাগের খাতাতেও নথিভুক্ত হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খরসওয়া বনবিভাগের চান্ডিল রেঞ্জ আধিকারিক শশীরঞ্জন প্রকাশ বলেন, "চান্ডিল বনাঞ্চলে যে কটি বাঘের সাইটিং হয়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি ছিল। তাদের মধ্যে কেউ বলেননি বাঘ আক্রমণাত্মক হয়ে হামলার মনোভাব দেখায়।" গত ৮ই জানুয়ারি চান্ডিলের রাঁচি-জামশেদপুর জাতীয় সড়ক থেকে ২ কিমি দূরে নারগাডির পাশে যে পিক আপ ভ্যানের চালক অরুণ কর্মকার গাড়ির হেডলাইটের সামনে বাঘ দেখেছিলেন।

সেই চালক বলেন, "আমি গাড়ি করে বাড়ি ফেরার সময় হঠাৎই প্রায় শুনশান রাস্তায় গাড়ির হেডলাইটের সামনে বাঘ দেখতে পাই। সাক্ষাৎ হলুদ ডোরাকাটাকে দেখে আমি গাড়ি পেছন করে নিই। কিন্তু ওই বাঘ আমার সামনেও আসেনি। পরে তাকে আর দেখা যায়নি।" একই বক্তব্য শুক্রবার সন্ধ্যায় বাঘটি মানবাজার দুই রেঞ্জে গেলে সেখানে দক্ষিণ রায়ের দর্শন হওয়া জয়পুর থেকে মেলা ফেরত এক মোটরবাইক আরোহীরও। শুধু তাই নয় ওই বনাঞ্চলের বিক্রমডি গ্রামে বনদপ্তরের প্রচারের গাড়ির সামনে দিয়ে হলুদ ডোরা কাটা চলে যাওয়ার পরেও তার কোন হামলার চেহারা দেখা যায়নি। কর্তৃপক্ষের কাছে এমন রিপোর্টই দিয়েছেন ওই গাড়িতে থাকা বনকর্মীরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ঝাড়খন্ড থেকে বাংলায় আসা জিনাতের প্রেমিক মানুষখেকো নয়।
  • গত ১৭ দিনে ঝাড়খন্ড-বাংলায় রয়্যাল দর্শন করেছেন হাফ ডজনের বেশি প্রত্যক্ষদর্শী।
  • পাহাড়তলির গ্রামগুলিতে থমকে যাওয়া জনজীবন যেন কিছুটা হলেও ছন্দে ফিরছে।
Advertisement