অর্ণব আইচ: ভারতকে রক্তাক্ত করতে এক ছাতার তলায় বাংলাদেশের একাধিক জঙ্গি সংগঠন। জেহাদি গোষ্ঠী হিজবুল তাহেরি, জেএমবি (জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ), নয়া জেএমবি, আনসারুল্লা বাংলা টিম, তউহিদ-আল-উল্লাহি (আল জিহাদি), আহাব (আহলে হাদিথ আন্দোলন বাংলাদেশ)-এর মতো একাধিক সংগঠন মিলে তৈরি করেছে 'জাঁহা ইন্ডিয়া'। যারা ইতিমধ্যে এদেশে 'জেহাদে'র রক্তবীজ ছড়ানোর কাজ শুরু করে ফেলেছে।
'জাঁহা ইন্ডিয়া'-র দুই সদস্য ইতিমধ্যে বাংলায় ঢুকেছে। দফায় দফায় বৈঠক সেরে ফিরেও গিয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সাতক্ষীরার এক জেএমবি নেতা ধুলিয়ান দিয়ে ঝাড়খণ্ডের পাঁকুড়ে ঢোকে। গত ৩ জানুয়ারি সেখানকার একটি গোডাউনে গোপন বৈঠক হয়। তার আগে চলে 'রিক্রুটমেন্ট'। তবে খুব বেশি সদস্য সংগ্রহ করা যায়নি। ১৫-২০ জনকে নিয়ে বৈঠক হয়। যেখানে জেহাদি সাহিত্যের মাধ্যমে মগজধোলাইয়ের প্রক্রিয়া চলে। জেহাদি কাজকর্মের জন্য ফান্ড তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। বলা হয়, কাতার-দুবাই থেকে টাকা জোগার করতে হবে। তবে বাংলাকে কীভাবে রক্তাক্ত করতে হবে, তার কার্যপ্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয় পরের বৈঠকে।
৬ জানুয়ারির দ্বিতীয় বৈঠকটি হয় মুর্শিদাবাদের লালগোলায়। সেখানে নিষিদ্ধ জেএমবির স্লিপার সেলের সদস্য থেকে নিষিদ্ধ পিএফআইয়ের সদস্যরাও হাজির ছিল। ছিল এক লিংকম্যানও। যে অহরহ বাংলাদেশে যাতায়াত করে জেহাদি সংগঠনগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। একইসঙ্গে দুবাই-কাতার থেকে টাকা জোগারের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাদের উপর। একইসঙ্গে মগজধোলাই করে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের যুবদের এই সংগঠনে যুক্ত করার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এ রাজ্যে থাকা জেএমবির স্লিপার সেলগুলিকে ফের সক্রিয় করার উদ্দেশেই মাঠে নেমেছে 'জাঁহা ইন্ডিয়া'। দেশের কোনায়-কোনায় জেহাদি মডিউল তৈরি করে গোড়া থেকে দেশের ভিত্তি আলগা করে দেওয়া।
আচমকাই ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এই জঙ্গি সংগঠনকে ঘিরে এপারের গোয়েন্দাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কারণ, হাসিনা জমানায় বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের সম্পূর্ণ সহযোগিতা পেত এপারের ইনটালিজেন্স। ফলে জেহাদিদের সীমান্ত পারাপারের খবর সহজেই পেত এপারের গোয়েন্দারা। কিন্তু পদ্মাপাড়ের সরকার বদলাতেই রাজনৈতিক সমীকরণ বদলেছে। ইউনুস জমানায় বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগের সহযোগিতা কমেছে বলে অভিযোগ। ফলে জেহাদিদের আনাগোনা সম্পর্কে খবর পেতে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে।