চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: মহিষাদলে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখল তৃণমূল। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফের বিপুল জয় শাসক শিবিরের। মহিষাদলের কালিকাকুণ্ডু-বক্সিচক সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোট আগামী ২৪ ডিসেম্বর। মোট ভোটার ১০৫০ জন। মোট আসন ৪২টি। বুধবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এই শেষ দিনেও বিরোধী বিজেপির শিবিরের বেহাল অবস্থা। কালিকাকুণ্ডু গ্রামের ১৮২ নম্বর বুথে ২ জন এবং ১৮৩ নম্বর বুথে ১ জন, এই নিয়ে মোট ৩ টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পেরেছে বিজেপি। বাকি ৩৯ টি আসনে লড়াই করার প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি। স্বাভাবিকভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৩৯ টি আসনেই নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। বিগত দিনে এই সমবায় পরিচালনার দায়িত্ব ছিল শাসক দলের। ফের বোর্ড পরিচালনার ক্ষমতা পেলেন তারা। খুশির হাওয়া স্থানীয় তৃণমূল শিবিরে।
যদিও এ বিষয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এই সমবায় ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। তাই এই ভোটে লড়াইয়ে তেমন একটা গুরুত্ব দিতে চাইছি না । মাত্র কয়েকজন মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পেরেছেন।" তবে বিজেপির এই বেহাল অবস্থার জন্য বিজেপিকেই তাই করেছে তৃণমূল শিবির। বিজেপির প্রতি মানুষের আস্থা ভরসা থাকছে না। স্থানীয় বিধায়ক তিলক কুমার চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "বিজেপি একটা ফাঁপা বেলুন। বাইর থেকে দেখতে ভালো লাগবে । কিন্তু কাজের কাজ কিছু নেই। ফাঁপা বুলি আর হাওয়াই ভর্তি। কালিকাকুণ্ডু-বক্সিচক সমবায় ভোটে তার বড় প্রমাণ পাওয়া গেল। প্রার্থী দেওয়ার মতো লোক খুঁজে পাচ্ছে না ওরা। এর থেকে আর কি লজ্জার বিষয় হতে পারে। তৃণমূলের জয়ের পতাকা উড়ছে, উড়বে।"
৫০ বছরের বেশি পুরনো এই সমবায় সমিতি। কালিকাপুর বক্সিচক এলাকায় কৃষকদের শুধুমাত্র কৃষি লোন নয়, ১৩০০ পরিবারের সমবায় নিজের খরচে পানীয় জল পৌঁছে দিতে পেরেছে। বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার এই কাজটি তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের বড় ভরসা জায়গা তৈরি করেছে। ভোটের ময়দানেও পেয়েছে পূর্ণ সমর্থন। এমন উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের পাশাপাশি মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লোন, পুরুষদের লোন, কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট সিস্টেমে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা, ন্যায্য মূল্যে মাছের খাদ্য সরবরাহ ইত্যাদির জনমুখী কাজের সুবাদে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পূর্বের পরিচালন বোর্ডকে ফিরিয়ে আনলেন এলাকার মানুষজন।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা ধীরাজ বন্ধু মাইতি জানিয়েছেন, "আমরা মানুষের সমস্যা জানার পাশাপাশি সমাধানে সক্রিয় পদক্ষেপ করি। কৃষিনির্ভর কালিকাকুন্ডু, বক্সীচক এলাকা। কৃষকদের আর্থিক সুরাহা করতে কৃষি লোন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের লোন শহর এলাকার জনমুখী কর্মকাণ্ড করে থাকি। তাই মানুষজন আমাদের উপরে ভরসা দেখেছেন। তাদের সমর্থন,আশীর্বাদ নিয়ে আমরা আগামী দিনে এই সমবায়কে আরো সমৃদ্ধ করব, উন্নত করব।" আগামী ১৩ ডিসেম্বর জয়ী প্রার্থীদের হাতে শংসাপত্র দেওয়া হবে এই সমবায় নির্বাচন কমিশনের তরফে। শংসাপত্র পাওয়ার পর বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠার অপেক্ষায় দিন গুনছেন জয়ী প্রার্থী থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।