রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: শাল, সেগুন আর পাইনে রূপ পাবে হলং বনবাংলো। একেবারে হুবহু আগের মতো দেখতে হবে এই বাংলোর চেহারা। পুড়ে যাওয়া এই বনবাংলো নির্মাণ করবে পূর্ত দপ্তরের নির্মাণ বিভাগ। তিনতলা এই বনবাংলো তৈরির খরচ ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। প্রথমে কংক্রিটের বাংলো তৈরি করে তারপর শাল, সেগুন আর পাইন কাঠ দিয়ে মুড়ে দেওয়া হবে বাংলোর ভিতর ও বাইরের দিক। যা দেখে কেউ বুঝতেই পারবে না এটা কংক্রিটের তৈরি। কাঠের হলং বনবাংলো নিয়ে দেশি বিদেশি পর্যটকদের আবেগকে মর্যাদা দিতেই এই ব্যবস্থা বলে জানা গিয়েছে।
গত সপ্তাহেই হলং বনবাংলোর ডিটেল প্রোজেক্ট রিপোর্ট রাজ্য বনদপ্তরে জমা দিয়েছে পূর্তদপ্তর। এখন টাকা অনুমোদন হলেই এই বাংলো নির্মাণের কাজ শুরু করবে পূর্তদপ্তর। জেলা পূর্তদপ্তরের নির্মাণ বিভাগের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপকুমার হালদার বলেন, "হলং বনবাংলো নির্মাণের ডিপিআর (ডিটেল প্রোজেক্ট রিপোর্ট) করে আমরা বনদপ্তরে জমা দিয়েছি। ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই বাংলো তৈরি হবে। তিনতলা বাংলোর ভিতর ও বাইরের ওয়াল উডেন ক্ল্যাডিং থাকবে। কাঠ সরবরাহ করবে বনদপ্তর। এখন অর্থ অনুমোদন হয়ে গেলেই আমরা টেন্ডার ডেকে কাজ শুরু করে দেব। আমাদের এই নির্মাণের কথা বলা হয়েছে।"
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বনবাংলোর ভিতর দিকে থাকবে শালকাঠের ফ্রেমে পাইন কাঠে মোড়া। আর বাইরের দিকে শাল কাঠের ফ্রেমে সেগুন কাঠ দিয়ে মুড়ে দেওয়া হবে। এবার এই বনবাংলোতে আগুন প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এই বনবাংলো তৈরির কাজ শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। বন্যপ্রাণ বিভাগের উত্তরবঙ্গের প্রধান মুখ্য বনপাল ভাস্কর জে ভি বলেন, "হলং বন বাংলোর ডিপিআর আমাদের কাছে জমা পড়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এই বনবাংলো তৈরির কাজ শুরু হবে বলে আমরা আশা করছি।"
উল্লেখ্য, ১৮ জুন রাত নয়টার পর বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের হলং বন বাংলো। পরে তদন্তে জানা যায়, ৮ কামরার এই বনবাংলোর তিনতলায় ৩ নম্বর ঘরে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে গোটা বাংলো পুড়ে যায়। ১৯৬৭ সালে নির্মিত কাঠের এই বনবাংলোকে রাজ্য পর্যটনের 'কোহিনুর' বলেন অনেকে। কাঠের এই বন বাংলোকে পুরনো আদলেই কাঠ দিয়ে তৈরির দাবি জানিয়েছিলেন বিভিন্ন পক্ষ। অবশেষে সেই পুরনো আদলেই ফিরছে উত্তরের আবেগ এই বনবাংলো।