অরূপ বসাক, মালবাজার: বুধবারের পর আবারও বৃহস্পতিবার উদ্ধার হল মর্টার। মাল ব্লকের ওদলাবাড়ি ঘিস নদীর চর থেকে সেনাবাহিনীর আরও দু’টি মর্টার শেল উদ্ধার করেছে। এখনও অবধি ঘিস নদী সংলগ্ন এলাকায় গত তিন মাসে মোট সাতটি মর্টার শেল পাওয়া গেল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে মালবাজার থানার পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেনাবাহিনীকে খবর দেয়।
কোথা থেকে এত মর্টার শেল এই নদীতে ভেসে আসছে? তাই নিয়ে প্রবল দুশ্চিন্তায় এলাকার মানুষ। বৃহস্পতিবার দুপুরে নদীতে কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। সেসময় মর্টার শেলটি নদীতে পান তাঁরা। সেটিকে উদ্ধার করে বালির স্তূপের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখেন। আর একটি মর্টার শেল নদীর পাশেই পড়ে থাকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ওই শেল দুটি কেউ নাড়াচাড়া না করেন। সেই বিষয়টি স্থানীয়দের জানিয়ে দেয় পুলিশ। আজ শুক্রবার বিন্নাগুড়ি থেকে সেনাবাহিনী এসে মর্টার শেল দুটি নিষ্ক্রিয় করে। এদিনও ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল ওই এলাকায়। সাধারণ বাসিন্দাদের এলাকার ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি।
ঘিস বস্তির বাসিন্দা মহম্মদ জাবেদ আলি বলেন, ''একের পর এক মর্টার শেল উদ্ধার হচ্ছে ঘিস নদী থেকে। কোথা থেকে এগুলি আসছে, তা বুঝতে পারছি না। যখন তখন বড় বিপদ ঘটতে পারে। আমরা শান্তিমতো বসবাস করতে পারছি না ঘিসবস্তি এলাকায়। এ নিয়ে সাতটি মর্টার শেল উদ্ধার হল।" ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে লোনাক হ্রদ বিপর্যয়ের পর সিকিমের একটি সেনা শিবির থেকে প্রচুর গোলাবারুদ-সহ আগ্নেয়াস্ত্র তিস্তার জলস্রোতে ভেসে সমতলে চলে আসে। ওলাবাড়িতে উদ্ধার হওয়া মর্টার শেলগুলি সম্ভবত তিস্তার চর থেকে তুলে আনা হয়েছে। শুরুর দিকে শেল উদ্ধারের প্রথম একটা-দুটো ঘটনার পর এলাকার স্থানীয়রা ভেবেছিলেন এই কথা।
অন্যদিকে ওদলাবাড়ি পেরিয়ে বাবুজোত, ধুমসিপাড়ার কাছে ঘিস নদী যেখানে তিস্তায় মিশেছে, নদীচরের সেই জায়গা থেকে প্রতিদিন কয়েকশো ডাম্পার বালি-পাথর তোলে। এছাড়া, তিস্তা নদীর ডাউনস্ট্রিম থেকেও বালি তোলার পর ডাম্পারে ঘিস নদী এলাকায় আনা হয়। কোনওভাবে বালি পাথরের সঙ্গে মর্টার শেলগুলি ঘিস নদীতে আসতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা। মালবাজার থানার আইসি সৌম্যজিৎ মল্লিক বলেন, "একের পর এক মর্টার শেল উদ্ধার হচ্ছে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানানো হবে।"