অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: কলকাতা ও বিধাননগরের মতো এবার হাওড়াতেও খোঁজ মিলল হেলে পড়া দুটি বহুতলের। ১৩৯ নম্বর শরৎ চ্যাটার্জি রোড ও ১৩৯/১ নম্বর শরৎ চ্যাটার্জি রোড এই ঠিকানায় পাশাপাশি দুটি পাঁচতলা বিল্ডিং একটির উপর একটি হেলে পড়েছে। দুটি বিল্ডিংয়ের মাথার কাছে কার্নিশ ঠেকে গিয়েছে। দুটি বিল্ডিং এরকম পাশাপাশি লেগে যাওয়ায় বাসিন্দারা আতঙ্কিত। বিষয়টি নজরে আসতেই তৎপর হাওড়া পুরসভা। এই প্রসঙ্গে হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী জানান, ‘‘আমরা খবর পেয়েছি। বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা গিয়ে বহুতল দুটি পর্যবেক্ষণ করার পরই যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।’’
বহুতলের বাসিন্দা অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের এই বিল্ডিং দুটি তৈরির সময় থেকেই হেলে আছে। গত কয়েক বছর ধরেই এটা হেলে আছে। বিল্ডিং দুটির মাথার দিকে কাছাকাছি এসে গিয়েছে। একটা বিল্ডিংয়ের সঙ্গে একটা বিল্ডিং ঠেকে রয়েছে। আমরা আতঙ্কে আছি। যে কোনওসময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই বিল্ডিংয়ের প্রোমোটারকে বিষয়টি আমরা বহুবার জানিয়েছি।’’
প্রসঙ্গত, পাঁচতলা করে দুটি বহুতলেই ৮টি করে ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে একটি বহুতলে ৮টি ফ্ল্যাটেই বাসিন্দারা থাকেন। অপর বহুতলে ৮টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৪টি ফ্ল্যাটে বর্তমানে বাসিন্দারা থাকেন। ১৩৯/১ বহুতলের এক বাসিন্দা জয়শ্রী কুন্ডু বলেন, ‘‘২০১৯ সালে ফ্ল্যাটে এসেছি সেই থেকেই দেখছি পাশের বহুতলটি হেলে আছে। পাশের ১৩৯ নম্বর বহুতলটি আমাদের বহুতলের উপর হেলে পড়ে ঠেকে গিয়েছে।’’ স্থানীয় এক বাসিন্দা নীলাঞ্জন বোস বলেন, ‘‘বহুতল এরকম হেলে থাকলে তো সাধারণ মানুষের বিপদ। হাওড়া শহরের অনেক জায়গাতেই এরকম বেআইনি বিল্ডিং হওয়ায় তা হেলে পড়ছে। প্রশাসনের বিষয়গুলি নজর দেওয়া উচিত।’’
৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘এই বিল্ডিংটি বেআইনিভাবে হয়েছে। পুরসভার তরফে অনেকবার এই বিল্ডিংয়ের নির্মাণকারীকে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও গত কয়েকবছর ধরে বিল্ডিংটি এরকম হয়ে রয়েছে।’’ বিল্ডিং দুটির প্রোমোটার তারাচাঁদ বাজাজ অবশ্য বললেন, ‘‘বিল্ডিং হেলে পড়েনি। নির্মাণের সময় বিল্ডিং দুটির বারান্দা করতে গিয়ে দুটি বিল্ডিংয়ের বারান্দা গায়ে গায়ে লেগে গিয়েছে। আইন মেনে নির্দিষ্ট ছাড় দিয়েই বিল্ডিং করা হয়েছে।’’