shono
Advertisement

দিদির কাছেই রইল বাংলা, তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে বাংলার রাজনীতিতে নজির মমতার

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রত্যাবর্তন কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিরোধীদের জন্য কড়া বার্তা বাহক হয়ে রইল বইকী।
Posted: 04:31 PM May 02, 2021Updated: 07:31 PM May 02, 2021

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘একপায়ে বাংলা দখল করব আর দু’পায়ে দিল্লি’। ভোট প্রচারের জনসভা থেকে এভাবেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ভাঙা পায়েই ময়দানে নেমেছিলেন জননেত্রী। কেন্দ্রের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীদের প্রচারের বিরুদ্ধে কার্যত একাই ২৯৪টি আসনে লড়েছেন। লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ওঠা গেরুয়া ঝড়কে বিধানসভা ভোটে একার নেতৃত্বে রুখে দিয়েছেন তিনি। সেই দীর্ঘ লড়াই আর আত্মত্যাগের আজ মধুর ফল পেলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিজেপিকে অনেকখানি পিছনে ফেলে ম্যাজিক ফিগারের অনেক বেশি আসন নিয়ে আরও একবার বঙ্গে ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করল মমতার তৃণমূল সরকার। দিদির কাছেই রইল বাংলা। 

Advertisement

একুশের নির্বাচনের আগে অদ্ভুত এক দলবদলের আবহ তৈরি হয়েছিল। তৃণমূলের ঘরভাঙা নিয়ে একটা সময় দলের অন্দরেও চিন্তার ভাঁজ পড়ে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামটাই যে বাংলার মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য যথেষ্ট ছিল, তা তৃতীয়বারের জন্য প্রমাণ করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। দলত্যাগীদের নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত হতে দেখা যায়নি তাঁকে। বরং বলে দিয়েছিলেন, যাঁরা বেরিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের নিয়ে না ভেবে, যাঁরা দীর্ঘ দশ বছর জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়েই লড়াই জিতবেন। এমনকী নিজের গড় ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রাম থেকে ভোটে লড়ার চ্যালেঞ্জও স্বেচ্ছায় নিয়েছিলেন। যে ভূমি আন্দোলন থেকে তৃণমূলের উত্থান হয়েছিল, সেই মাটিতেই জয়ের নয়া ইতিহাস গড়ার শপথ নিয়েছিলেন। বিজেপি প্রার্থী তথা পূর্ব মেদিনীপুরের ‘ঘরের ছেলে’ শুভেন্দু অধিকারীর (Subhendu Adhikari) বিরুদ্ধে লড়াইকে বাংলার মা-বোনেদের পাশে চেয়েছিলেন তিনি। 

[আরও পড়ুন: ডোমজুড়ে গণনাকেন্দ্রে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ, পরাজিত বিজেপি প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুর জামুড়িয়ায়]   

দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম জমানার অবসান ঘটিয়ে ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে ইতিহাস গড়েছিলেন মমতা। ২০১৬ সালে সবুজ ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল বিরোধীরা। সেই মমতা সাম্রাজ্যের পতন ঘটাতে এবার একের পর এক বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এসে বঙ্গে প্রচার করেছেন। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) ১৮টি সভা করে গিয়েছেন। কিন্তু মমতার জনপ্রিয়তা, তাঁর প্রতি রাজ্যবাসীর বিশ্বাস, আস্থা-ভরসাকে টলাতে পারেননি শাহ-নাড্ডা-স্মৃতি ইরানিরা। কেন্দ্রীয় শক্তির চোখ রাঙানিকে কখনওই ভয় করেননি তিনি। বরং ভাঙা পা নিয়েই মিটিং-মিছিল, জনসভা চালিয়ে গিয়েছেন। দশ বছর পরও বিধানসভা ভোটে তিনিই ফ্যাক্টর, তা আজ স্পষ্ট হয়ে গেল। দেশের একমাত্র মহিলা ‘মুখ্যমন্ত্রী’ যে ভারতীয় রাজনীতির সেরা নক্ষত্রদের মধ্যে অন্যতম, তা নিয়ে আর কোনও দ্বিধা রইল না।

বাংলায় তৃতীয়বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রত্যাবর্তন কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিরোধীদের জন্য কড়া বার্তা বাহক হয়ে রইল বইকি। মাটি কামড়ে কীভাবে পড়ে থাকতে হয়, তা শিখিয়ে দিলেন। কখনও মমতাময়ী জননেত্রী হিসেবে তো কখনও অভিভাবক, আবার কখনও কড়া দলনেত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন। আমফান হোক বা করোনার চোখ রাঙানি, আদর্শ ক্যাপ্টেনের মতোই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ভবিষ্যতে তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই যে কোনও রাজনৈতিক দলের জন্যই কড়া টক্কর, তা বলা এতটুকু অত্যুক্তি হবে না।

[আরও পড়ুন: রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি আরও সংকটজনক, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত শতাধিক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement