সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টানা ৩০ ঘণ্টা লড়াইয়ের পর ১১০ ফুটের গর্ত থেকে উদ্ধার শিশুকন্যা। বুধবার রাত ১০ টার কিছু আগেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী শিশুটিকে উদ্ধার করে। প্রায় সঙ্গেসঙ্গেই বাবা-মায়ের সঙ্গে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের মুঙ্গের জেলার মুর্গিয়াচক এলাকায়। গোটা ঘটনায় স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও বিহার প্রশাসন।
[বাড়ির অমতে বিয়ের শাস্তি, নবদম্পতিকে বিবস্ত্র করে খাওয়ানো হল প্রস্রাব]
বছর তিনেকের শিশুকন্যার নাম সান্নু। বাবা-মায়ের সঙ্গে সে দাদুর বাড়িতে বেড়াতে আসে। দাদুর বাড়ির কাছেই গভীর নলকূপের জন্য গর্ত খুঁড়ে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল চারটে নাগাদ খেলতে খেলতে সেই ১১০ ফুট গভীর গর্তেই পড়ে যায় সান্নু। মাটির উপর থেকে ৪৫ ফুট গভীরে গিয়ে আটকে যায় সে। তার কান্নার শব্দে বাবা-মা ও অন্যান্য পরিজনরা ছুটে আসেন। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে খবর দেওয়া হয়। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে খবর দেওয়া হয়। নলকূপের গর্তের সমান্তরালে পাশেই আরও একটি গর্ত খোঁড়া হয়। সেই গর্তের গভীরতাও ৪৫ ফুট। এই গর্ত খোঁড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল। কোনওভাবে মাটি সরিয়ে এই গর্ত দিয়ে শিশুটিকে বের করে আনা।
এদিকে প্রশাসনের নির্দেশ ততক্ষণে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন মুঙ্গের পুলিশের এসপি গৌরব মঙ্গল। গভীর গর্তের মধ্যে শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তড়িঘড়ি পাইপের সাহায্যে অক্সিজেনের বন্দোবস্তও করা হয়। গর্তের উপরে সিলিন্ডার রেখে পাইপে যাতে অক্সিজেনের কোনওরকম ঘাটতি না হয় সেজন্য বারবার চাপ দিতে থাকেন চিকিৎসক। সেই সঙ্গে মায়ের গলার আওয়াজ পেতে থাকে সান্নু। পাইপের সাহায্যে সান্নুর কাছাকাছি একটি যন্ত্র পৌঁছে দিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। গর্তের মধ্যে আটকে পড়ে শিশুটি যাতে ভয় পেয়ে অচৈতন্য না পড়ে সেজন্য এই ব্যবস্থা করা হয়। একই সঙ্গে বৃষ্টি যাতে অপারেশন প্রক্রিয়াকে কোনওভাবে ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে সেজন্য গর্তের উপরে অনেকটা এলাকা জুড়েই ত্রিপল টাঙানো হয়। মঙ্গলবার রাত ও বুধবার দিনভর অপারেশন চালানোর পর অবশেষে সাফল্য মেলে রাত ১০টার কিছু আগে। গর্ত থেকে কাদায় মাখামাখি অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সান্নুকে। তৎক্ষণাৎ বাবা নচিকেতা সাউ ও মা সুরভিদেবীর সঙ্গে সান্নুকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটে অ্যাম্বুল্যান্স। শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী ভাল আছে একরত্তি। শুধু দীর্ঘক্ষণ গর্তে আটকে পড়ে মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত হয়েছে।
[মহিলার প্রবেশে গঙ্গাজলে শুদ্ধিকরণ মন্দিরের, বিগ্রহ গেল গঙ্গাস্নানে]
বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সাফল্যে উৎফুল্ল মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ইতিমধ্যেই শিশুটির চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মেয়েকে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে পেয়ে খুশি সাউ দম্পতিও।