সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রিটেনে খলিস্তানিদের তাণ্ডবের জেরে 'এমার্জেন্সি'র (Emergency) প্রদর্শন বন্ধ হওয়ায় ভারতের নেতা-মন্ত্রীদের মৌনব্রত নিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়েছিলেন কঙ্গনা রানাউত। শুক্রবার সকালেই সাংসদ-অভিনেত্রী আক্ষেপ করে বলেছিলেন, "আমার বাকস্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে একজন ব্রিটিশ সাংসদ সরব হলেন, কিন্তু আমাদের ভারতীয় নেতা-মন্ত্রী, নারীবাদীরা চুপ।" আর এদিন বিকেলেই কঙ্গনার (Kangana Ranaut) পাশে দাঁড়িয়ে কড়া বার্তা দিল বিদেশমন্ত্রক।
বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, "বাকস্বাধীনতা বাছাই করে প্রয়োগ করা যায় না। সকলেরই বাকস্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। এরকম কোনও ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। যে বা যারা এই তাণ্ডবের সঙ্গে যুক্ত, তাদের অবিলম্বে জবাবদিহি করতে হবে। ব্রিটেন সরকারও তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবে বলেই আশা রাখছি।" এদিন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, "আমরা বিভিন্ন সূত্রে খবর পাচ্ছি, ব্রিটেনে 'এমার্জেন্সি' দেখানোর সময় প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ভারত বিরোধী কিছু লোক এই ধরনের তাণ্ডবে উৎসাহ-উসকানি দিচ্ছে, যা নিয়ে সেদেশের সরকার-প্রশাসন আশা করি ব্যবস্থা নেবে। যারা অন্যায় করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।" পাশাপাশি এমন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি এও জানালেন যে, "আমাদের লন্ডনস্থিত হাইকমিশন সেদেশে বসবাসকারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দিকটাও নজরে রেখেছে।"
সম্প্রতি ‘এমার্জেন্সি’র শো চলাকালীন লন্ডনের সিনেমা হলে তাণ্ডব চালায় খলিস্তানিরা। জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে লন্ডনের হ্যারো ভ্যু হলে ‘এমার্জেন্সি’ (Emergency) দেখানো হচ্ছিল। দর্শকদের অধিকাংশই ছিলেন প্রবাসী ভারতীয়। সিনেমা শুরু হওয়ার ৪০ মিনিট পরে আচমকাই প্রেক্ষাগৃহে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করে দেয় খলিস্তানিরা। মুখোশ পরা কয়েকজন হলের গর্ভগৃহে ভারতবিরোধী স্লোগান দেওয়া শুরু করে। দর্শকদের মধ্যে শিখ দাঙ্গার লিফলেট বিলি করে তারা। অধিকাংশই চিৎকার করে বলতে থাকে, ‘ভারত নিপাত যাক।’ প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, “প্রচুর সংখ্যক লোক ঢুকে পড়েছিল প্রেক্ষাগৃহে।” ১০ মিনিটের মধ্যে হলে পুলিশ পৌঁছে যায়। দর্শকদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় হলের বাইরে। কিন্তু তাণ্ডবকারীদের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। পুলিশের তরফে যুক্তি, প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে সকলেরই। যেহেতু কেউই আহত হননি তাই কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তড়িঘড়ি সিনেমার শো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে লন্ডনে এমন ঘটনার পরে ব্রিটেনের তিনটি শহরে এমার্জেন্সির শো বাতিল করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut) অভিনীত ছবিটি হলে দেখানোর সময়ে গোটা ব্রিটেনজুড়েই তাণ্ডব চালানোর পরিকল্পনা ছিল শিখদের। তার জেরেই বার্মিংহাম, উলভারহ্যাম্পটন এবং ওয়েস্ট লন্ডনে বন্ধ রাখা হয় সিনেমার শো। সেই ইস্যুতেই সরব হয়ে ব্রিটিশ সাংসদের মন্তব্য, “খলিস্তানপন্থীরা সিনেমাহলে আমার সংসদীয় এলাকায় ‘এমার্জেন্সি’র প্রদর্শন বন্ধ হওয়ার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলাম। বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটার ভয়ে বেশ কিছু প্রেক্ষাগৃহ থেকে ছবিটি তুলে নেওয়া হয়েছে। যে বা যারা বাকস্বাধীনতা রোধ করার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করা দরকার।” বব ব্ল্যাকম্যানের সেই মন্তব্য শেয়ার করে ভারতের রাজনীতিক, নারীবাদীদের বিঁধে কঙ্গনা এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “আমার বাকস্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে একজন ব্রিটিশ সাংসদ সরব হলেন, কিন্তু আমাদের ভারতীয় নেতা-মন্ত্রী, নারীবাদীরা চুপ।” এরপরই শুক্রবার সন্ধেয় সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে সরব ভারতের বিদেশমন্ত্রক।