shono
Advertisement
Koushani Mukherjee

'৭ মাস বাড়িতে বসেছিলাম, তার পর শিবুদার ফোন এল', 'বহুরূপী' কথা শোনালেন কৌশানী

নন্দিতা-শিবপ্রসাদের সঙ্গে প্রথমবার কাজের অভিজ্ঞতা কেমন? জানালেন কৌশানী মুখোপাধ্যায়।
Published By: Sandipta BhanjaPosted: 02:05 PM Sep 27, 2024Updated: 02:21 PM Sep 27, 2024

শম্পালী মৌলিক: এই প্রথমবার উইন্ডোজ-এর সঙ্গে কাজ করলেন কৌশানী মুখোপাধ‌্যায়(Koushani Mukherjee)। পুজোর ছবি ‘বহুরূপী’তে অন‌্যতম মুখ‌্য চরিত্রে তিনি। ২০১৫ সালে বড় পর্দায় কেরিয়ার শুরু ‘পারব না আমি ছাড়তে তোকে’র মাধ‌্যমে। তার নয় বছরের মাথায় নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ‌্যায়ের সঙ্গে কাজের সুযোগ এল। সে প্রসঙ্গ তুলতে কৌশানী বলছেন, “প্রথম যখন ফোন আসে, সারপ্রাইজড ছিলাম। তারপর নন্দিতাদি-শিবুদার সঙ্গে দেখা করি, আস্তে আস্তে কথা বলতে শুরু করি, আগের নার্ভাসনেস কেটে যায়। চিন্তা ছিল ঠিক করে পারব কিনা, ওদের যেন হতাশ না করি। আমাকে সেরাটা দিতে হবে এই ভাবনা ছিল। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বলব, এটা স্বপ্নপূরণ নিশ্চয়ই। আর দুজনের সঙ্গে এত সুন্দর সম্পর্ক এবং পুরো ‘উইন্ডোজ’ টিমের সঙ্গেই আমার দারুণ সুন্দর ইকুয়েশন এখন। পরিবারের মতো বলা যায়।”

Advertisement

কৌশানী ভালো অভিনেত্রী, ইদানীংকালে অনেককেই বলতে শুনেছি। কিন্তু ঠিক সুযোগটা পাচ্ছিলেন না। ‘আবার প্রলয়’ সিরিজে অভিনেত্রী নজর কাড়েন। সেইটা কি উইন্ডোজ-এর ছবিতে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে একটা ফ‌্যাক্টর ছিল? "আমি নিজেও শিবুদাকে প্রশ্ন করেছিলাম যে, নয় বছর লাগল আমাকে খুঁজে পেতে বা কাস্ট করতে! সকলেই জানি, বড় হাউসগুলোতে একটু গতানুগতিক কাস্টিং চলে। সেখানে শিবুদারা ভাবছে যে, নতুনদের সঙ্গে কাজ করবে। শিবুদা আমার কিছু রিলস, কয়েকটা গান দেখেছিল। ‘প্রলয়’ নিয়ে হয়তো চারপাশের লোকের থেকে শুনেছিল শিবুদা। কিন্তু সেটাই আমাকে ‘বহুরূপী’তে(Bohurupi) নেওয়ার প্রাথমিক কারণ ছিল না", জানালেন কৌশানী।

ইতিমধ্যে ‘শিমূল-পলাশ’ গানটা দর্শক ভীষণ ভালোবেসেছে। এ আর রহমান পর্যন্ত টুইট করেছেন গানটা নিয়ে। ‘একটা বাংলা ছবির গান নিয়ে এ আর রহমান টুইট করছেন, এটা মাইলফলক। আর ব‌্যক্তিগতভাবে আমার দারুণ অভিজ্ঞতা। এত প্রেমের দৃশ্যে অভিনয় করেছি, অনস্ক্রিন এত বিয়ে করেছি, কিন্তু এই বিয়েটা একদম আলাদা। বীরভূমে গিয়ে ওখানকার সংস্কৃতি পর্যবেক্ষণ করার পর জানতে পারি, ওখানকার মেয়েরা এখনও পলাশফুলে সেজেই বিয়ে করে। আর খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয়। কমবয়সের সেই উত্তেজনা আমার বিয়ের প্রথম দৃশ্যেও দেখবে দর্শক। কাদায় নাচ আছে। এছাড়া পটারির দৃশ‌্য আছে। যার জন‌্য আমাকে ক্লাস নিয়ে শিখতে হয়েছে।’ উচ্ছ্বসিত শোনাল অভিনেত্রীকে।

প্রসঙ্গত, পটারির দৃশ্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। এক ঝটকায় দর্শকের বিখ‌্যাত ছবি ‘ঘোস্ট’-এর কথা মনে পড়তে পারে। কৌশানী বললেন, "ঠিকই বলেছ। এটা একটা রেফারেন্স পয়েন্ট ছিল শিবুদার কথায়। আর বলে দিয়েছিল, যেন আমি রোজ পটারি করি, এমন দেখতে লাগে। শুধু শুটিং করছি না মনে হয় যেন। এই গানে আমি সবচেয়ে বড় কমপ্লিমেন্ট পেয়েছি যে, অনেকেই বলছে পাশের বাড়ির স্বামী-স্ত্রীর গল্প।"
আর এই ছবিতে কৌশানীকে ভিন্নরূপেও দেখা যাবে। এই প্রথমবার আইটেম সং-এ পাওয়া যাবে তাঁকে। সদ্য লঞ্চ করেছে সেই ‘ডাকাতিয়া বাঁশি’ গানটি। ‘ঝিমলি’ চরিত্রের অনেক প্রাপ্তি মেনে নিলেন কৌশানী। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ‌্যায়কে সহ অভিনেতা হিসাবে পাওয়াও বিরাট প্রাপ্তি। তবে উলটো দিকে তুখড় অভিনেতা থাকায় পাল্লা দেওয়ার চাপও থাকে। কৌশানী বলছেন, "একদম ঠিক। তবে এই গানটার পরে কৌশিক গঙ্গোপাধ‌্যায় সমাজমাধ‌্যমে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ‌্যায়ের পাশাপাশি আমার কথাও লেখেন। এটাই প্রাপ্তি। আমি নিজের থাউজেন্ড পার্সেন্ট দিয়েছি। শিবুদা তো অটোমেটিকালি ক্রিম নিয়ে যাবে একটা সিনে, কিন্তু সেটা যাতে একা পুরোপুরি না নিতে পারে, সেই চেষ্টা করেছি।"

এই ছবির অন‌্য জুটি আবির চট্টোপাধ‌্যায় এবং ঋতাভরী চক্রবর্তী। সেক্ষেত্রে ঋতাভরীর চরিত্রের প্রতি লোভ হয়নি? আবিরের বিপরীতে কাজের সম্ভাবনা ছিল সেক্ষেত্রে। প্রশ্ন শুনে কৌশানী হাসলেন, "অনেস্টলি বলছি, আবিরদার সঙ্গে জুটিতে কাজ করার খুবই ইচ্ছে। আবিরদাকেও জানিয়েছি। এই ছবিতে আমার সঙ্গে আবিরদার তেমন দৃশ‌্যও নেই। তবে ঝিমলি আর পরি- এই দুটো চরিত্রের মধ্যে বেছে নিতে বললে, আমি ঝিমলিকেই বেছে নেব, এনিটাইম। ঝিমলির মাধ‌্যমে অনেক কিছু দেখানোর সুযোগ আছে। ছবিটা দেখলে বুঝবে। আমার মনে হয়, আমি সেরাটাই পেয়েছি (হাসি)।" সেই সঙ্গে আক্ষেপ করলেন সুযোগের প্রসঙ্গে। "বম্বেতে আজকে দেখি, নতুন যে কাজ করছে তার পর পর কতকগুলো সুযোগ আসছে। যেমন, তৃপ্তি দিমরি ‘অ‌্যানিম‌্যাল’-এর ওই গানের পর ন‌্যাশনাল ক্রাশের জায়গায় চলে গেল। পর পর ফিল্মে সুযোগ পেল। এটা কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে হয় না। যদি অভিনয়ে দক্ষতা দেখাও, তাও না। ‘আবার প্রলয়’-এর পরে আমি কয়েকটা সুযোগ পেয়েছিলাম, কিন্তু সেই একই ধরনের রোল, যেখানে অভিনেতা হিসাবে আমার কিছু পাওয়ার নেই। তাই এখন ঠিক করেছি, বছরে দুটো ছবি করব কিন্তু যেটা নিয়ে লোকে কথা বলবে।" স্পষ্ট বললেন অভিনেত্রী।

ইন্ডাস্ট্রিতে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে কি লবি-ই কাজ করে শেষপর্যন্ত? “আমি ঠিক জানি না। তবে পিআর করা বা তেল দেওয়ার ক্ষেত্রে আমি খুব খারাপ। এটা আমার ডিফল্ট। ঠিক জায়গায় তেল দেওয়া দরকার, মাঝে মাঝে মনে হয়। ‘আবার প্রলয়’-এর পরে আশা করেছিলাম, যাদের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছি, তারা হয়তো এবার ফোন করবে। কখনও করেনি। ‘প্রলয়’-এর সাত মাস পরে আমি শিবুদার ফোন পাই। ওই সাত মাস বাড়িতে বসেছিলাম, ধৈর্য রেখেছিলাম। কোয়ালিটি ম‌্যাটার করে এখন।” ছবিতে ডাকাত বিক্রমের (শিবপ্রসাদ) বউ কৌশানী। ছবির নাম ‘বহুরূপী’। সুতরাং মুখোশের ভূমিকা রয়েছে গল্পে। ইন্ডাস্ট্রির মুখোশধারীদের এখন চিনতে পারেন? কৌশানীর সপাট জবাব, "অনেককে সময়ের সঙ্গে চিনে গিয়েছি। অনেককে চেনা বাকি। সত্যি বলতে আমি খুব এক্সট্রোভার্ট। সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। কিন্তু গভীর বন্ধুত্ব যাদের সঙ্গে, তারা ইন্ডাস্ট্রির বাইরে। কারণ বিশ্বাস করি, ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে খুব একটা বন্ধুত্ব হয় না।" কোন ছবিকে এগিয়ে রাখবেন পুজোয়? “স্বার্থপরের মতো ‘বহুরূপী’-কেই এগিয়ে রাখব। তবে চাইব, তিনটে বাংলা ছবিই দর্শক দেখুক। কারণ, খারাপ সময়। সকলের কমবেশি মনখারাপ। ছবিগুলোই বিনোদন। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পুজোয় আমার ছবি মুক্তি পাচ্ছে। চাইব আমাদের ছবিটা বেশি দেখুক দর্শক (হাসি)।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এই প্রথমবার উইন্ডোজ-এর সঙ্গে কাজ করলেন কৌশানী মুখোপাধ্যায়।
  • পুজোর ছবি ‘বহুরূপী’তে অন্যতম মুখ্য চরিত্রে তিনি।
  • কৌশানী বলছেন, “প্রথম যখন ফোন আসে, সারপ্রাইজড ছিলাম।"
Advertisement