সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকৃতি শান্ত হলেও উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকায় এখনও রুদ্ররোষের ছাপ স্পষ্ট! আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার থেকে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন জায়গা প্লাবিত হওয়ার ফলে কোথাও মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়েছে মানুষ তো কোথাও বা আবার এখনও পর্যন্ত বৈদ্যুতিন সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ভারী বর্ষণের ফলে বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলি। দুর্যোগের ফলে কাছের মানুষ হারানো পরিবারগুলিও শোক সামলে কোনওমতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এমতাবস্থায় উত্তরবঙ্গে ত্রাণ পাঠালেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।
কথা দিয়েছিলেন, উত্তরবঙ্গের এই কঠিন সময়ে পাশে থাকবেন। প্রতিশ্রুতিমাফিক সেকাজই করলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বুধবার কোচবিহারের বাঁধের পাড় সংলগ্ন এলাকায় ফ্যানক্লাব মারফৎ ত্রাণ বিলি করলেন অভিনেতা। নিজে সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারলেও প্রসেনজিতের উদ্যোগে তাঁর অনুরাগীরা চাল-ডাল, আলু থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে হাজির হয়েছিলেন কোচবিহারের বাঁধের পাড় অঞ্চলে। ত্রাণ বিলির সেই ক্যামেরাবন্দি মুহূর্ত ইতিমধ্যেই ফ্যানক্লাবের তরফে পোস্ট করা হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রির 'জ্যেষ্ঠপুত্রে'র এহেন উদ্যোগে আপ্লুত বন্যার্তরা। অন্যদিকে 'দেবী চৌধুরানি'র স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ে হাজির হয়ে দেব জানিয়েছেন, ঘাটাল থেকে উত্তরবঙ্গে এক ট্রাক বোঝাই ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতের কয়েক ঘণ্টার নিম্নচাপের বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি বিপর্যস্ত হয়েছে। দার্জিলিংয়ের একাধিক জায়গা ধসে বিধ্বস্ত। বিচ্ছিন্ন হয়েছিল যোগাযোগও। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে দুর্যোগে। এমতাবস্থায় শোকপ্রকাশ না করে কার্নিভালে যোগ দেওয়ায় টলিউড তারকাদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়! একাংশ আবার উত্তরবঙ্গকে ‘প্রিয় শুটিং ডেস্টিনেশন’ হিসেবে ব্যবহারের কথা মনে করিয়ে একযোগে বাংলা সিনে ইন্ডাস্ট্রিকে কটাক্ষ করা শুরু করে। এমন আবহেই মঙ্গলবার বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে সাহায্যের হাত বাড়ানোর কথা ঘোষণা করে টলিউড। বাংলা সিনেদুনিয়ার অন্যতম দুই অভিভাবক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত-সহ বেশ কজন তারকা সোশাল মিডিয়ার পাতায় একটি পোস্ট ভাগ করে নিয়েছিলেন। সেখানে উল্লেখ, ‘দুর্গাপুজোর বাংলা সিনেমা মানুষকে আনন্দ দিতে পেরেছে। কিন্তু প্রকৃতি সেই উদযাপনে বাধা দিয়েছে। আমরা উত্তরবঙ্গের তীব্র কান্না অনুভব করতে পারি। এইসময়ে আমরা হাতে-হাত ধরে আপনাদের যুদ্ধের অংশীদার হওয়ার তাগিদ অনুভব করেছি। কারণ উত্তরবঙ্গের মানুষদের ছাড়া আমাদের সিনেমা, আমাদের অস্তিত্ব অসম্পূর্ণ।’ সেই পোস্টেই সংযোজন, ‘সিনেমা শুধু বিনোদন দিতে পারে, এমন তো নয়। সিনেমা ভরসাও দিতে পারে।’
