সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: না ফেরার দেশে পাঞ্জাবি গায়ক রাজবীর জাওয়ান্দা। মাত্র ৩৫-এই সব শেষ! ভূমিপুত্রের অকালপ্রয়াণে পাঞ্জাবজুড়ে শোকের আবহ। শোকের ছায়া দেশের সিনেদুনিয়াতেও। বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবের পুনা গ্রামে নিজের পৈতৃক ভিটেতেই সম্পন্ন হল রাজবীর জাওয়ান্দার শেষকৃত্য। চোখের জলে ঘরের ছেলেকে বিদায় জানাতে হাজির হয়েছিলেন শয়ে শয়ে মানুষ। গায়কের শেষকৃত্যে যোগ দেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানও।
জানা গিয়েছে, আট বছর বয়সি ছেলেই রাজবীরের মুখাগ্নি করেছে। যা দেখে প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি! ইতিমধ্যেই গায়কের বিদায়লগ্নের বেশ কিছু মুহূর্ত প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানেই দেখা গেল, শেষযাত্রাতেও সাধের লাল পাগড়ি মাথায় রাজবীর জাওয়ান্দা। তাঁর শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যামি ভির্ক, কুলবিন্দর বিল্লা, গগন কোকরি, হরভজন মন-সহ অনেকেই। শেষকৃত্য সেরে এসে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানও। সোশাল মিডিয়ায় প্রয়াত গায়কের উদ্দেশে তিনি লিখেছেন, 'পাঞ্জাবি সঙ্গীতজগৎ চিরতরে একজন কিংবদন্তিকে হারাল। রাজবীর জাওয়ান্দা, যিনি অল্প বয়সেই সুরেলা কণ্ঠে মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন, সেই সুর চিরকাল আমাদের মনে রয়ে যাবে। ঈশ্বরের কাছে ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি। ঈশ্বর ওঁর পরিবার এবং ভক্তদের শোক সামলে ওঠার শক্তি দিন।'
প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে সাধের ৩১ লাখি 'বাহন' নিয়ে শিমলায় রোড ট্রিপে গিয়েছিলেন রাজীব। তার ঠিক দিন কয়েক আগেই বিএমডব্লিউ বাইকটি কিনেছিলেন। হাতে-পায়ে ধরে নিষেধ করেছিলেন স্ত্রী। বলেছিলেন, ‘বিপদ হবে, যেও না!’ কিন্তু নিয়তির ডাক হয়তো ফেরাতে পারেননি রাজীব জাওয়ান্দা! গত ২৭ সেপ্টেম্বর হিমাচলের পাহাড়ি রাস্তায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন। এরপর গুরুতর জখম অবস্থায় ১২ দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছেন। কিন্তু শেষমেশ আর ঘরে ফেরা হল না পাঞ্জাবি গায়কের। ছোট দুই সন্তান, স্ত্রী রেখে মাত্র পয়ত্রিশেই বিদায় নিলেন ইহজগৎ থেকে।
জানা গিয়েছে, হিমাচলের বদ্দির রাস্তায় একটি গরু বাইকের সামনে চলে আসায় নিয়ন্ত্রণ হারান রাজবীর। দ্রুতগামী বাইক থেকে ছিটকে পড়ে গুরুতর জখম হন। প্রথমে সোলান ভ্যালির এক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, পরে মোহালির হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। খবর, শিরদাঁড়ায় গুরুতর চোট পেয়েছিলেন রাজবীর। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কেও প্রবল রক্তক্ষরণ হয়। শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল। ক্রিটিক্যাল কেয়ারে চিকিৎসকদের লাগাতার কড়া পর্যবেক্ষণ ও সমস্তরকম চেষ্টা সত্ত্বেও শেষরক্ষা হয়নি! বারো দিনের লড়াই শেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন রাজবীর। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ দিলজিৎ দোসাঞ্ঝ, অ্যামি ভির্ক-সহ গোটা পাঞ্জাবি সিনেদুনিয়া।পাঞ্জাবের বর্তমান প্রজন্মকে নিজের গানে বুঁদ করেছিলেন রাজবীর জাওয়ান্দা। ‘কঙ্গানি’, ‘চাকভি মন্দির’-এর মতো একাধিক বিখ্যাত গান উপহার দিয়ে সিনেদুনিয়াতেও পা রেখেছিলেন তিনি। ‘সুবেদার যোগিন্দর সিং’, ‘জিন্দ জান’-এর মতো আঞ্চলিক ভাষার সিনেমায় তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল।
