সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না শিল্পা শেট্টির (Shilpa Shetty)! সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, শুক্রবার সাতসকালে পর্ন কাণ্ড মামলায় রাজ-শিল্পার বাড়িতে হানা দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট। যদিও এই খবরকে ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ কুন্দ্রার (Raj Kundra) আইনজীবী! এদিকে স্বাভাবিকভাবেই স্বামীর 'কীর্তি'র জেরে বলিউড অভিনেত্রীর নাম আবারও চর্চার শিরোনামে। এবার ইডি হানার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে মুখ খুললেন রাজ কুন্দ্রা।
সোশাল মিডিয়ায় শিল্পার স্বামী রাজের সাফ কথা, 'যাঁরা অতিনাটকীয়তা খুঁজছেন, তাঁদের একেবারে সোজাসাপটা কথা বলি। গত চার বছর ধরে যে তদন্তটা চলছে, প্রতিনিয়ত আমি তাতে সহযোগিতা করছি। আর হ্যাঁ, 'পর্নগ্রাফি', 'আর্থিক প্রতারণা' কিংবা আমার জড়িত থাকা নিয়ে যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে, সেপ্রসঙ্গে বলি, মিথ্যের বেড়াজালে কখনও সত্যিটা চাপা থাকে না। সবশেষে ন্যায়ের জয় হবেই।' সেই পোস্টেই নিন্দুকদের একহাত নিয়ে রাজ কুন্দ্রার সংযোজন, 'আর বারবার আমার স্ত্রীয়ের নাম জড়াবেন না এসব মামলায়। দয়া করে সীমা লঙ্ঘন করবেন না।'
মুম্বই এবং উত্তরপ্রদেশের ১৫টি এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেটের তদন্তকারীরা। বাদ যায়নি রাজ কুন্দ্রা-সহ সংশ্লিষ্ট মামলায় জড়িত বাকিদের বাসস্থানও। ‘হটশটস’ নামে এক প্রাপ্তবয়স্কদের অ্যাপ খোলার জন্য বছর খানেক আগেই হাজতবাস হয়েছিল রাজের। পাক্কা দু মাস জেলে কাটিয়ে তার পর জামিন পেয়ে। সেই স্মৃতিকে অতীতের খাতায় ফেলে রেখে যখন স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন রাজ-শিল্পা। তখনই ফের দুয়ারে ইডি।
প্রসঙ্গত, আইপিএল বেটিং, নীলছবি মামলায় রাজ কুন্দ্রার নাম উঠেছিল আগেই। এবার ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বিটকয়েন পঞ্জি স্ক্যামের আর্থিক তছরুপ মামলাতেও নাম জড়িয়েছে রাজ কুন্দ্রার। যার জেরে স্থাবর-অস্থাবর সব মিলিয়ে রাজ-শিল্পার প্রায় প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট। এর মধ্যে জুহুর সমুদ্রমুখী বিলাসবহুল বাংলোও রয়েছে। যে বাংলো কিনা অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টির নামে কেনা। সেই তালিকায় জুহুর পাশাপাশি তারকাদম্পতির পুণের প্রাসাদোপম বাংলোও রয়েছে। রাজ কুন্দ্রার নামে কিছু ইক্যুয়িটি শেয়ারও বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি এর আগে।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লি পুলিশের কাছে ভ্যারিয়েবল টেক প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি সংস্থার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। অমিত ভরদ্বাজ, বিবেক ভরদ্বাজ, সিম্পি ভরদ্বাজ, মহেন্দ্র ভরদ্বাজ-সহ আরও বেশ কয়েক জনের নাম উঠে আসে অভিযুক্ত হিসেবে। বিটকয়েনে বিনিয়োগের নামে কোটি কোটি টাকা তোলেন অভিযুক্তরা। শুধুমাত্র ২০১৭ সালেই ৬,৬০০ কোটি টাকা তোলা হয়েছিল বলে জানা যায়। যাঁদের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়, তাঁদের প্রতি মাসে বিটকয়েনে ১০ শতাংশ টাকা রিটার্ন দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। ক্রিপ্টো সম্পত্তি গড়ে তোলার লোভে অনেকেই টাকা ঢালেন ওই সংস্থায়। কিন্তু ওই সংস্থা সকলকে ঠকানোয় একাধিক মামলা দায়ের হয়। এই মামলার তদন্তে নেমে রাজের সঙ্গে ওই সংস্থার সংযোগ খুঁজে পায় ইডি। জানা গিয়েছে, অমিতের থেকে ২৮৫টি বিটকয়েন পেয়েছিলেন রাজ। ইডি সূত্রে খবর, গোটা দুর্নীতি চক্রের মাথা ছিলেন অমিত। নিরীহ মানুষকে টোপ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আদায় করেছিলেন তিনি। সেই বিটকয়েনই পরে রাজের কাছে যায়, বর্তমানে যার বাজারদর প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। সেই প্রেক্ষিতেই রাজের ৯৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। হাজার কোটির দুর্নিতি, ইডির মামলা, যাবতীয় আইনি জটের মাঝেই গত আগস্ট মাসে তিন কোটি টাকার বিলাসবহুল গাড়ির কিনে ফের চর্চার শিরোনামে এসেছিলেন রাজ কুন্দ্রা এবং শিল্পা শেট্টি।